অগ্নিমিত্রা পাল। —ফাইল চিত্র।
কত ভোটে জিততে চান, দলের অন্দরে সেই লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। সূত্রের খবর, দলের বৈঠকে কর্মীদের উদ্দেশে তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘আগের বার দিলীপদাকে (দিলীপ ঘোষ) যে মার্জিনে আপনারা জিতিয়েছিলেন, এ বার দ্বিগুণ মার্জিনে জিততে হবে। আমি নিশ্চিত তার চেয়ে দ্বিগুণ মার্জিনে এ বার আমাকে জেতাবেন।’’ সঙ্গে বিজেপি প্রার্থীর আশ্বাস, ‘‘আমি প্রতিটা মণ্ডলে যাব। প্রত্যেক দেবতুল্য কার্যকর্তার সঙ্গে বসব। বৈঠক করব। কথা বলব।’’
মঙ্গলবার মেদিনীপুরে এসে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অগ্নিমিত্রা। সেখানেই ওই কথা বলেছেন তিনি। কর্মীরা তাঁকে আরও বলতে শুনেছেন, ‘‘দল আমাকে পাঠিয়েছে আপনাদের সঙ্গে থেকে লড়াই করার জন্য। মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম, মাতঙ্গিনীর পূণ্যভূমি। কী ভাবে বিপ্লব করতে হয়, আন্দোলন করতে হয়, লড়াই করতে হয়, সারা ভারতবর্ষকে মেদিনীপুরই শিখিয়েছে।’’ বুধবার বেলদার রানিকুঠিতে জেলা বিজেপির কর্মী, বিধানসভার মণ্ডল সভাপতি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা, লোকসভা নির্বাচন কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন অগ্নিমিত্রা। দিনভর বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় প্রচার মিছিলে যোগ দেন প্রার্থী।
রাতে যান খড়্গপুরে। গেটবাজারের কেদারনাথ মন্দিরে পুজো দেন। সঙ্গে ছিলেন শহরের দিলীপ অনুগামী নেতা-কর্মী ও পুর প্রতিনিধিরা। অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘‘আপনাদের আশীর্বাদ চাই, যাতে মেদিনীপুর-খড়্গপুরের উন্নয়নের জন্য সংসদে গিয়ে কথা বলতে পারি।’’ রেল প্রশাসনের বিরুদ্ধেও চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন বিজেপি প্রার্থী। বলেছেন, ‘‘এখানে শুনছি অনেক বস্তি এলাকা আছে। রেল সেগুলি ভাঙবে। এই দিদিভাইয়ের শপথ, যতক্ষণ আছি কেউ হাত লাগিয়ে দেখুন!"
গতবার মেদিনীপুর থেকে ৮৮,৯৫২ ভোটে জিতেছিলেন দিলীপ। তিনি পেয়েছিলেন ৬,৮৫,৪৩৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, তৃণমূলের মানস ভুঁইয়া পেয়েছিলেন ৫,৯৬,৪৮১ ভোট। এ বারও মেদিনীপুর থেকে দিলীপের টিকিট পাওয়া নিয়ে শেষ পর্যন্ত টানাপড়েন চলে। অবশেষে দিলীপকে তাঁর পুরনো কেন্দ্র ছাড়তে হয়েছে। অগ্নিমিত্রা অবশ্য মেদিনীপুরে পা রাখা থেকেই বারবার দিলীপের নাম করেছেন। বৈঠকেও বলেছেন, ‘‘দিলীপদার আশীর্বাদ নিয়ে আজকে আমি মেদিনীপুরে আপনাদের সঙ্গে।’’ বস্তুত, মেদিনীপুরে দিলীপ অনুগামীদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের সম্পর্ক ‘শীতল’। দিলীপের বর্ধমান-দুর্গাপুরে প্রার্থী হওয়া আর অগ্নিমিত্রার মেদিনীপুরে প্রার্থী হওয়ার পিছনে শুভেন্দুর ‘হাত’ থাকা নিয়ে নানা মহলে চর্চাও রয়েছে। কর্মী বৈঠকে মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী বলেছেন, ‘‘১৩ মে বর্ধমান-দুর্গাপুরের ভোট। মেদিনীপুরে ভোট ২৫ মে। দিলীপদা কথা দিয়েছেন ১৩ মে-র পরে এখানে এসে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচার করবেন।’’
অগ্নিমিত্রা আসানসোলের বিধায়ক। এখন তাঁর প্রতিপক্ষ তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া মেদিনীপুরেরই বিধায়ক। ফলে, চেনা জমির অ্যাডভান্টেজ তাঁর থাকবে। তবে কঅগ্নিমিত্রা শুনিয়েছেন, ‘‘আমি আপনাদেরই বাড়ির মেয়ে। আসানসোলের মানুষ জানেন, এই তিন বছর দিদিভাই কী ভাবে কার্যকর্তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’