বর্ধমানে হকি স্টিক হাতে দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
সকালে দলের পুরনো নেতাদের সঙ্গে নিয়ে হকি খেলা, বিকেলে মহিলা মোর্চার সঙ্গে চা-চক্রে হিন্দি গান গেয়ে প্রতিপক্ষ কীর্তি আজাদকে ‘পরদেশি’ বলে কটাক্ষ করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার দুপুরে ভাতারের ওরগ্রামে বুথভিত্তিক কর্মিসভাতেও হাজির হন তিনি।
এ দিন প্রাতর্ভ্রমণে বর্ধমানের ইছলাবাদ ইউথ ক্লাবের মাঠে যান দিলীপ। তাঁকে নাগরিক সমাজের পক্ষে হকি স্টিক আর বল দেন বিজেপির বর্ধমান শহরের সাসপেন্ড হওয়া নেতা শ্যামল রায়। ছিলেন অনেক পুরনো নেতা-কর্মীরাও। অন্য দিনের প্রাতর্ভ্রমণের চেয়ে কমবয়েসীদের ভিড়ও ছিল বেশি। তবে গত এক মাসের ব্যতিক্রম, জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা-কে দিলীপের সঙ্গে দেখা যায়নি। প্রশ্ন উঠছে শ্যামল মাঠে নামতেই কি জেলা সভাপতি বাইরে? দিলীপ বলেন, “আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছেন। এটা দলের কর্মসূচি নয়। এটা দিলীপ ঘোষের কর্মসূচি, ‘চা চক্রে দিলীপদা’। সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল সবাই এখানে আছে, সবাই এখানে আসবে। এখানে জেলা সভাপতি বা রাজ্য সভাপতির কোনও ব্যাপার নেই। এটা দিলীপ ঘোষের নিজস্ব ব্র্যান্ড।’’
সাসপেন্ড নেতাকে নিয়ে কর্মসূচি করার প্রশ্নে তাঁর দাবি, “আমরা কোথায় দলের অফিসে আছি? রাস্তাতেই বসে আছি। আমাদের দলের নেতারা রাস্তাতেই বসেন। যারা বিজেপি করে তাদের রাস্তাতেই বসতে হয়। ঠান্ডাঘরে বসলে বিজেপি করা হবে না।” বিজেপির আদিরা মনে করছেন, দিলীপদা জেলা সভাপতিকেই আসলে কটাক্ষ করেছেন। জেলা সভাপতি যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্যে নারাজ। আর শ্যামল বলেন, “আমি বিজেপির একজন সমর্থক। দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। জানিয়েছি, দলের সঙ্গেই আছি।’’
বেলা ১১টা নাগাদ বড় নীলপুরে দলের মহিলা মোর্চার চা-চক্রে যান দিলীপ। তিনি বলেন, “যেখানে যাচ্ছি, সেখানেই আমাকে বলছে, দাদা চমকেছে। আমি তাঁদের বলছি, ১৩ মে পর্যন্ত দেখছি। সব লিখে রাখছি। তখন আপনাদের ওই গানটা গাইতে হবে।” এরপরেই তিনি ‘রাজা হিন্দুস্থানি’ সিনেমার ‘পরদেশি, পরদেশি... জানা নেহি মুঝে ছোড়কে’ গানটি গেয়ে ওঠেন। দাবি করেন, এখানকার লোক তখন গাইবেন, ‘অতিথি তুম কব জাওগে’। তাঁর কটাক্ষ, “অতিথি আর রোদে বার হচ্ছেন না। তৃণমূলের ভাইদের বলছি, এ সবের পাল্লায় পড়ে উল্টোপাল্টা করবেন না। সুদ জমা হচ্ছে।”
তৃণমূলের বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী কীর্তি আজাদের দাবি, “নারীবিদ্বেষী বিজেপিকে নিয়ে কোনও কথা বলতে চাইছি না।” তবে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “বর্ধমান-দুর্গাপুরের মানুষ কাকে ‘পরদেশি’, কাকে ‘অতিথি’ বলবে, সেটা বুঝিয়ে দেবে। বিজেপি প্রার্থী তো শহরে অশান্তি তৈরি করতে চাইছেন।”