রাজনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের সময় শেষ হতে চলেছে রাজ্যে। ভুটান সীমান্তবর্তী শহর জয়গাঁয় আলিপুরদুয়ার লোকসভার বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গার সমর্থনে সভা করতে এসে এ ভাবেই রাজ্যের শাসক দলকে আক্রমণ করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রেশন দুর্নীতি থেকে শুরু করে সিএএ বিরোধিতা নিয়েও রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। তিন বলেন, ‘‘করোনার সময়ে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে কেন্দ্রীয় সরকার বিনামূল্যে পাঁচ কেজি রেশন দিয়েছে। তবে তৃণমূল সরকার সেটাতেও দুর্নীতি করছে এবং সাধারণ মানুষের মুখের অন্ন কেড়ে নিচ্ছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বর্তমান যে পরিস্থিতি, সেটা থেকে স্পষ্ট যে তৃণমূলের সময় শেষ হতে চলেছে। এবং আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় এলেই সিএএ (নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন) চালু করবো।’’ তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে এক বারও না চা বাগানের উল্লেখ না থাকায় কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
এ দিন জয়গাঁর বড় মেচিয়াবস্তির ময়দানে সভা করেন রাজনাথ সিংহ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই সভায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কয়েক’শো সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সিএএ-র বিরোধিতা করায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেন তিনি। রাজনাথ বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার চায় না সিএএ লাগু হোক। কারণ, ওরা এমন অনেককে আশ্রয় দিয়েছে যারা বেআইনি ভাবে এ রয়েছে। যারা বৈধ নাগরিক নয়। আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় এলে সিএএ চালু করব।’’
তবে সভায় চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনাথ মুখ না খোলায় তাঁকে কড়া আক্রমণ করেছে তৃণমূল। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র বারা ওঁরাও বলেন, ‘‘কিছু বছর আগে বাজেটে চা শ্রমিকদের জন্য এক হাজার টাকা কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কোথায় সেই টাকা! আসলে কেন্দ্র তো চা শ্রমিকদের জন্য কিছুই করেনি। তাই ওঁদের বলার কিছু নেই। তাই কিছু বলেননি।’’
এ ছাড়া, জয়গাঁয় ব্যবসায়ীদের এক্সচেঞ্জ-কাউন্টার তৈরি, সভাস্থল দিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকা রাঙামাটি এলাকায় ভুটানের কলকারখানার ধোঁয়ার জন্য দূষণ-সহ নানান সমস্যা নিয়েও সভাতে কথা বলেননি রাজনাথ। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাঙামাটি এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা উর্গেন গুরুং বলেন, ‘‘এত বছর ধরে এই সমস্যা ভোগ করছি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এলেন, কিন্তু কোনও কথা বললেন না। আমরা কি শুধু ভোট দেওয়ার জন্যই রয়েছি?’’
জয়গাঁ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিশঙ্কর গুপ্তা বলেন, ‘‘আমাদের সমস্যার কথা এর আগের সাংসদ, বর্তমান বিধায়ক সকলকেই লিখিত ভাবে জানিয়েছি। তাঁরাই হয়তো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পর্যন্ত কথা পৌঁছননি।’’