শেষ পর্যন্ত ঘাটাল লোকসভা আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না কংগ্রেস। —ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত ঘাটাল লোকসভা আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না কংগ্রেস। যদিও, মঙ্গলবার প্রকাশিত দলের সর্বশেষ প্রার্থিতালিকাতেও ঘাটাল আসনে পাপিয়া চক্রবর্তীর নামের উল্লেখ ছিল। কিন্তু বুধবার দুপুরে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এআইসিসির প্রকাশিত তালিকাটি পোস্ট করে কংগ্রেস প্রার্থী পাপিয়া লেখেন, ‘‘এআইসিসি নিজেদের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে ২২ ঘণ্টা আগে নিজেদের চূড়ান্ত প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছে। ৩২টি লোকসভা আসনে প্রার্থিতালিকার ঘোষণায় দেখা যাচ্ছে, সেখানে এখনও আমার নাম রয়ে গিয়েছে।’’ এর পর তিনি আরও লেখেন, ‘‘কিন্তু আমি সভাপতির কাছে নিজের প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করছি, জোটের রাজনীতিকে মান্যতা দিয়ে।’’
তবে কংগ্রেসের আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিধান ভবনে বসে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম মির সাংবাদিক বৈঠকে পিয়ার প্রার্থিপদ স্থগিত করে দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ঘাটাল নিয়ে সিদ্ধান্ত আগামী দিনে জানানো হবে। এ বিষয়ে এআইসিসি কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করায় পাপিয়া ধরেই নিয়েছেন, যে এ বারের লোকসভা ভোটে তাঁর আর কংগ্রেস প্রার্থী হওয়া হচ্ছে না। তাই তিনি ফেসবুকে এআইসিসির তালিকা তুলে ধরে প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
৭ এপ্রিল এআইসিসি থেকে পশ্চিমবঙ্গের তিন লোকসভা আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। সেই ঘোষণায় দেখা যায়, ঘাটাল লোকসভায় কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন পাপিয়া। বিধান ভবনে বৈঠক শুরু হতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের তরফে নেতারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপি নেত্রী পাপিয়া চক্রবর্তীকে প্রার্থী হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রার্থীকে না সরানো হলে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ থেকে সরবেন না।’’ পর্যবেক্ষক মিরের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তাঁরা। পরে মিরই তাঁদের বৈঠক ডেকে পাঠান। তাঁরা লিখিত অভিযোগপত্রও দেন পর্যবেক্ষক মিরকে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ঘাটাল কেন্দ্রে প্রার্থী প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন তিনি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে ঘাটালের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেওয়ার কথাও ঘোষণাও করে দেন। সঙ্গে মির জানিয়ে দেন, ওই কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। আর এত দিনেও ওই আসনে বিকল্প প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় ঘাটালে যে কংগ্রেস আর প্রার্থী দেবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের নেতারা।
এমনটা বুঝেই নিজে ভোটের লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন পাপিয়া। এই আসনটি নিয়েও বামফ্রন্টের সঙ্গে কংগ্রেসের কোন্দল বেধেছিল। গত কয়েক দশক ধরে এই আসনে প্রার্থী দিয়ে এসেছে সিপিআই। ২০০৯ সালেও এই আসনে জিতেছিলেন সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত। এ বার সেই আসনে সিপিআইয়ের প্রার্থী হয়েছেন তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মনে করা হচ্ছে নিজেদের প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে কংগ্রেসের সমর্থন যেতে পারে সিপিআইয়ের দিকেই।