রাহুল গান্ধী এবং সনিয়া গান্ধীর পুরনো কেন্দ্রে প্রার্থী কিশোরীলাল শর্মা। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
‘চাপরাশি’কে প্রার্থী করে পাঠিয়েছেন গান্ধীরা। বিজেপি শিবির থেকে মাঝে মধ্যেই ভেসে আসছে এমন মন্তব্য তাঁকে লক্ষ্য করে। তিনি কিশোরীলাল শর্মা। এক কালে উত্তরপ্রদেশের ‘গান্ধীগড়’ বলে পরিচিত অমেঠী থেকে এ বার তাঁকেই লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস।
এক কালে যে অমেঠীর প্রার্থী ছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার কনিষ্ঠপুত্র সঞ্জয় গান্ধী। পরে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী, তাঁর স্ত্রী সনিয়া গান্ধী এবং পুত্র রাহুল গান্ধীকেও প্রার্থী হিসাবে পেয়েছে উত্তরপ্রদেশের এই লোকসভা কেন্দ্র। সেখানেই এ বার প্রার্থী কিশোরীলাল। লড়াই সহজ নয়। বিশেষত যে অমেঠী গত লোকসভা ভোটেই তিন বারের প্রার্থী রাহুলকে সরিয়ে বেছে নিয়েছে বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন টেলি তারকা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে। কিন্তু কিশোরীলালের লড়াই আরও কঠিন হয়েছে বিরোধী বিজেপির ব্যক্তিগত আক্রমণে। কিশোরীলালকে কংগ্রেসের চাপরাশি বলে আক্রমণ করেছেন উত্তরপ্রদেশেরই এক বিজেপি নেতা দীনেশ প্রতাপ সিংহ।
সম্প্রতিই দীনেশপ্রতাপ প্রচারে বলেন, ‘‘কংগ্রেস বুঝে গিয়েছে, এই আসন তারা পাচ্ছে না। তাই গান্ধীদের চাপরাশিকে পাঠানো হয়েছে ‘প্রক্সি প্রার্থী’ হিসাবে লড়তে।’’
প্রসঙ্গত, অমেঠীতে লোকসভা ভোটে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল কংগ্রেসে। রাহুল যে হচ্ছেন না, তা বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছিল। বিকল্প প্রার্থী হিসাবে উঠে আসছিল রাজীব কন্যা প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা এবং জামাতা রবার্ট বঢরার নামও। তবে সেই সব জল্পনায় জল ঢেলে এককালের ‘গান্ধীগড়ে’ এ বার আর কোনও গান্ধী পরিবারের প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। বদলে অমেঠীর জন্য বেছে নেওয়া হয় কিশোরীলালকে। যিনি এককালে অমেঠীর প্রাক্তন সাংসদ রাহুলের সাংসদ প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতেন এই অমেঠীতেই।
কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই উত্তরপ্রদেশে বিজেপি নেতাদের কটাক্ষের শিকার হতে শুরু করেন কিশোরীলাল। তবে মুখ বুজে না থেকে এ বার সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যম তাঁকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবা প্রথাগত শিক্ষা পাননি। তবে আমাকে মূল্যবোধ শিখিয়েছিলেন। তাই উনি আমাকে যা-ই বলুন, আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব না।’’
কিন্তু হঠাৎ তাঁকে কেন অমেঠীতে প্রার্থী করল কংগ্রেস? এ প্রশ্নের জবাবে কিশোরীলাল বলেন, ‘‘এত দিন নেতাদের হয়ে এই কাজই করেছি। এখন দল নতুন দায়িত্ব দিয়েছে। তবে আমি এখনও চাইব রাহুল জি, প্রিয়াঙ্কা জি এই আসন থেকে লড়ুন। কারণ এটা তাঁদের ঐতিহ্যের অঙ্গ।’’