পাশাপাশি। মঙ্গলবার সিউড়িতে যোগী আদিত্যনাথের সভামঞ্চে দেবাশিস ধর ও দেবতনু ভট্টাচার্য। — নিজস্ব চিত্র।
ঘটনা ১: মহম্মদবাজার ব্লকের আঙ্গারগড়িয়ায় মঙ্গলবার বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্যের সমর্থনে দেওয়াল লিখনে নামলেন দলের কর্মী ও সমর্থকেরা। যেখানে দেবতনু মনোনয়ন জমা দিয়েছেন গত বৃহস্পতিবার। শুক্র, শনি, রবি ও সোমবার পেরিয়ে শেষে মঙ্গলবার শুরু হল তাঁর নামে দেওয়াল লিখন।
ঘটনা ২: পাশাপাশি দু’টি দেওয়ালে দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন করে ভোট দেওয়ার ডাক। দু'টিতেই পদ্মের প্রতীক আঁকা, দু'টি দেওয়ালেই প্রার্থীর নামের পাশে লেখা বিজেপি প্রার্থী। ডান দিকের দেওয়ালে নাম রয়েছে দেবাশিস ধরের। বাঁ দিকের দেওয়ালে দেবতনু ভট্টাচার্যের। সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের তেঁতুলতলা এলাকায় এমনই ছবি দেখা গেল।
এই দু’টি ঘটনাই জানান দিচ্ছে, শেষ মুহূর্তে দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পরে বীরভূম জেলা বিজেপির ঠিক কতটা ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থায় রয়েছে। নতুন প্রার্থী দেবতনুর নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়নি বললেই চলে। এখনও বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের দেওয়ালে দেওয়ালে জ্বলজ্বল করছে পুরনো প্রার্থী দেবাশিসের নাম। দেবাশিস আবার মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ। সে মামলার ফল কী হবে, তা নিয়ে চর্চা চলছে। সব মিলিয়ে জেলার বিজেপি কর্মীরা বিভ্রান্ত। কী করবেন, কে চূড়ান্ত প্রার্থী, বুঝতে পারছেন না তাঁরা। এমন ঘটনায় ভোটারেরাও বিভ্রান্ত হবেন বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ।
বীরভূমের এক বিজেপি নেতা বলেন, “নতুন প্রার্থীর নাম লেখার আগে অন্তত পুরনো প্রার্থীর নামটা মুছে দেওয়া উচিত ছিল। আমাদের সৌভাগ্য যে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে দেবাশিস নামের কোনও নির্দল প্রার্থী বা অন্য দলের প্রার্থী নেই। না হলে সংশয় আরও বাড়ত।’’
দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপির ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি সন্তোষ ভান্ডারি বলেন, ‘‘জেলা থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি। আদালতের কোনও নির্দেশ হয়নি। এ দিকে, এলাকায় প্রচার চলছে নতুন প্রার্থীর। কিন্তু দেওয়ালে দেবাশিসদার নাম। তাই আমরা দেওয়াল লিখন না মুছে পাশাপাশি ফাঁকা জায়গায় দেবতনুদার সমর্থনে দেওয়াল লিখছি।’’
দলের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত ২০ দিন ধরে প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় শয়ে শয়ে দেওয়াল লেখা হয়েছে দেবাশিসকে প্রার্থী দেখিয়ে। সেই সব দেওয়াল মুছে নতুন করে দেওয়াল লেখার ঝক্কি এখন কে নেবে?
এ দিন অবশ্য সিউড়িতে যোগী আদিত্যনাথের সভামঞ্চে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী দুই পাশে দেখা গিয়েছে দেবাশিস ও দেবতনু, দু’জনকেই। বিভ্রান্তির কথা স্বীকার করতে রাজি নন বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি বাবন দাস। তিনি বলেন, “মানুষ পদ্মফুলকে চেনে, পদ্মফুলেই ভোট দেবে। এখানে প্রার্থীর নামটা কোনও বিষয়ই নয়।”