ভোটের প্রচারে দেওয়াল লিখন বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র ।
বেশ কিছু দেওয়াল চুন করে দলের ‘পদ্ম’ প্রতীক আঁকা হয়েছিল দিন কয়েক আগেই। বনগাঁ লোকসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ফের একবার শান্তনু ঠাকুরের নাম ঘোষণা হতেই পুরোদমে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিল গেরুয়া শিবির।
২০১৯-এ লোকসভা ভোটে তাঁর জেঠিমা, তৃণমূলের মমতা ঠাকুরকে হারিয়ে সাংসদ ও মন্ত্রী হন শান্তনু। শান্তনু জয়ী হন ১ লক্ষ ৯ হাজার ৮৫৫ ভোটের ব্যবধানে। এ বার ভোটের দিন ঘোষণার আগেই বিজেপির প্রার্থী ঘোষণা এবং প্রচার শুরু হওয়ায় কি তারা এক ধাপ এগিয়ে গেল? মানছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব।
উল্টে বনগাঁর তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকেই মনে করছেন, শান্তনু প্রার্থী হওয়ায় তাঁদের লড়াই সহজ হল। তাঁদের মতে, গত বার সিএএ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন) কার্যকর এবং নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় মতুয়া-উদ্বাস্তু সমাজের বেশিরভাগ মানুষের সমর্থন পেয়েছিলেন শান্তনু। কিন্তু আজও সিএএ কার্যকর হয়নি। ফলে, মতুয়াদের একাংশ শান্তনু তথা বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ। তার উপর এখানে বিজেপির গোষ্ঠী-কোন্দল শান্তনুকে ভোগাতে পারে।
তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি কাকে প্রার্থী করল, তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। তবে, প্রার্থী হিসেবে যাঁর নাম শুনছি, তাঁকে ৫ বছর মানুষ খুঁজে পাননি। এলাকার কোনও উন্নয়ন করেননি। মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে ভাঁওতা দিয়েছেন। ভোটে মানুষ এর জবাব ওঁকে দেবেন।’’
পক্ষান্তরে, শান্তনুর দাবি, ‘‘গত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রায় আড়াই বছর অতিমারির জন্য কাজ করার সুযোগ পাইনি। তাও একজন সাংসদ হিসাবে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা নিয়ে যা কাজ করেছি, তা রাজ্যের আর কোনও সাংসদ করতে পারেননি। আমি মানুষের সঙ্গেই ছিলাম। আগামী দিনে মানুষ আমাকে সুযোগ দিলে মানুষের জন্য আরও কাজ করব।"
তবে, পদ্ম-শিবিরের একাংশ মানছেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লাগাম টানা না গেলে ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে। তাঁরা জানান, বনগাঁর কয়েকজন প্রথম সারির বিজেপি নেতা-বিধায়কের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে শান্তনুর দূরত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যে সব নেতা- বিধায়কদের দীর্ঘদিন শান্তনুর সঙ্গে দলীয় কর্মসূচিতে ইদানীং প্রায় দেখাই যায় না, তার মধ্যে বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার অন্যতম। তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘শান্তনু ঠাকুরের প্রার্থী হওয়াটা স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাফল্য এবং শান্তনু ঠাকুরের কাজের ভিত্তিতে মানুষ ভোট দেবেন।" বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রার্থীকে জেতাতে বিজেপির সব নেতা-কর্মীরা এককাট্টা।’’