হরিণঘাটার বিধায়ক বিজেপির অসীম সরকার। ছবি সুদেব দাস। নিজস্ব চিত্র।
নিজেরই দলের মন্ত্রী তথা বনগাঁ কেন্দ্রের প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরকে ভোট না দেওয়ার জন্য তিনি কর্মীদের বলে দিয়েছেন— হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের এমনই একটি অডিয়ো ক্লিপ (আনন্দবাজার তার সত্যতা যাচাই করেনি) মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। যদিও অসীমের দাবি, অডিয়ো ক্লিপটি বহু পুরনো এবং তাঁকে চাপ দিয়ে তৃণমূল ফোনে ওই কথা বলিয়ে নিয়েছিল।
ভাইরাল হওয়া ক্লিপে অসীমকে বলতে শোনা যাচ্ছে: “আমার তো প্রচুর ভোট আছে হেলেঞ্চা, বাগদা... আমি বলেছি, কেউ শান্তনুকে ভোট দিবি না। ও হচ্ছে একেবারে (ছাপার অযোগ্য শব্দ) মানে (ছাপার অযোগ্য শব্দ) মদখোর, গাঁজাখোর। ওর বাবা এখনও গাঁজা ছাড়া বাঁচে না।”
হরিণঘাটা নদিয়ায় হলেও উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র তথা বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত। বিজেপি সূত্রের খবর, ইদানীং অসীমের সঙ্গে শান্তনুর দূরত্ব বেড়েছে। দুর্গাপুজোর আগে-পরে দলের উদ্বাস্তু সেলের ব্যানারে শান্তনু ও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডলকে বাদ রেখেই অসীম মিটিং-মিছিল করেছিলেন। তবে এ দিন দেবদাস দাবি করেন, “অডিয়োটি ভুয়ো। তৃণমূলের তৈরি। অসীমবাবু দলের বিধায়ক, তিনি সাংসদ সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারেন না।”
তবে অসীমের ব্যাখ্যা অন্য। এ দিন তিনি দাবি করেন, “২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আমাকে ভয় দেখিয়ে এই ধরনের কথা বলতে বাধ্য করেছে। ওরা বলেছিল, আমার স্ত্রীকে অনেক দূরের জেলার স্কুলে বদলি করে দেবে। ভোট এলেই এখন এই ধরনের পুরনো রেকর্ডিং ওরা চালাচ্ছে।” বনগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের পাল্টা দাবি, “তৃণমূলের ভয় দেখানোর প্রশ্নই আসে না। এটা বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের ফল। তবে উনি হয়তো সঠিক কথাটাই বলে দিয়েছেন।”
এই অডিয়ো ক্লিপ যারা প্রকাশ্যে এনেছে সেই ইউটিউব চ্যানেলের কর্তা ধৃতরাষ্ট্র দত্ত উত্তর ২৪ পরগনারই পানিহাটি থানার ঘোলার বাসিন্দা। তাঁর দাবি, “২০১৯ সাল নাগাদ আমরা বিধায়কের বিরুদ্ধে খবর করেছিলাম। পরে তিনি ফোন করে খবরটি ডিলিট করতে বলেন। সেই সময় উনি অনেক কিছুই বলেছিলেন। উনি যদি এ রকম কথা বলে থাকেন, তা হলে সেটাই হয়তো সম্প্রচারিত হয়েছে। আমার ফোন থেকে ওঁকে ফোন করে ভয় দেখানো হয়নি।”
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর অবশ্য অসীমের কথা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “অডিয়োটি আমি শুনিনি। না জেনে মন্তব্য করব না। শোনার পর বলব।”