হর্ষ বর্ধন। — ফাইল চিত্র।
মন্ত্রিত্ব গিয়েছিল আগেই। জেতা আসনও গিয়েছে। শনিবার বিজেপি লোকসভা ভোটের যে প্রথম প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে, তাতে তাঁর নাম নেই। তার পরেই রবিবার দিল্লির চাঁদনি চকের সাংসদ হর্ষ বর্ধন জানালেন, তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এই চিকিৎসক-নেতা ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং দলীয় কর্মীদের।
রবিবার একটি পোস্ট দিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বলেন, ‘‘৩০ বছরের বেশি উজ্জ্বল নির্বাচনী কেরিয়ার, সে সময় আমি পাঁচটি বিধানসভা এবং দু’টি লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে লড়ে জিতেছি। দল, রাজ্য এবং কেন্দ্রে একাধিক সম্মাননীয় পদে ছিলাম। এখন আমি আবার নিজের শিকড়ে ফিরব।’’ তিনি জানিয়েছেন, আবার চিকিৎসার কাজেই ফিরবেন তিনি। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘আমি এগিয়ে চলেছি। আর অপেক্ষা করতে পারছি না। আমার অনেক প্রতিশ্রুতি এখনও রাখতে হবে। আমার স্বপ্ন রয়েছে। আমি জানি, আপনাদের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। কৃষ্ণনগরে আমার ইএনটি কেন্দ্রও আমার ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে।’’
শনিবার প্রথম প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি। সেখানে দিল্লিতে চার সাংসদকেই আর টিকিট দেয়নি। পরবেশ বর্মা, রমেশ বিধুরি, মীনাক্ষী লেখি, হর্ষ বর্ধন— চার জনকেই প্রার্থী করা হয়নি। মোট ৩৩ জন সাংসদকে আর টিকিট দেওয়া হয়নি। তাঁদের পরিবর্তে নতুন মুখে ভরসা রেখেছেন শীর্ষনেতৃত্ব।
হর্ষ এও জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএএস)-এর কারণেই নির্বাচনী রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘তাঁরা আমায় বোঝাতে পেরেছিলেন, তার কারণ, আমার কাছে রাজনীতি মানে দারিদ্র্য, রোগ, অবহেলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’’ এর পরেই তিনি নিজের রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরেন। বলেন, ‘‘দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছি। দু’দফায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকও হয়েছি, যে পদ আমার হৃদয়ের খুব কাছে। আমি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ভারত পোলিয়োমুক্ত হওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে। অতিমারির প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ে কোটি কোটি ভারতবাসীর স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার সুযোগ পেয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন হর্ষ। বিজেপি সূত্রে খবর, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই তা করেছিলেন তিনি। অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বার বার আঙুল উঠেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দিকে। কোভিড টিকা বণ্টন থেকে হাসপাতালে পরিষেবার অভাব, সব নিয়েই কাঠগড়ায় ওঠে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অভিযোগ উঠেছিল, কোভিড পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ মন্ত্রী। তার পরেই মন্ত্রিত্ব ছাড়েন হর্ষ। এ বার বিজেপির প্রার্থী তালিকায় স্থান পেলেন না তিনি। পরের দিনই ঘোষণা করলেন, এ বার রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।