দু’হাতে ব্যাগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দফতরে আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষে গত ২৫ জানুয়ারি লোকসভা নির্বাচনের সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকায় প্রায় ১৭ লাখ নাম ‘ভুয়ো’ বলে দাবি বিজেপির। কোন কোন নামের ভোটার না থাকলেও তালিকায় রয়েছে সেই তালিকা বুধবার কমিশনের মুখ্য আধিকারিকের কাছে জমা দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। এর মধ্যে এমন তালিকাও রয়েছে যেখানে একই ভোটারের নাম একাধিকবার তালিকায় রয়েছে। বিজেপির পক্ষে দাবি কর হয়েছে, দলের হিসাবে মোট ‘ভুয়ো ভোটার’-এর সংখ্যা ১৬,৯১,১৩২।
বুধবার ২৪টি ব্যাগে করে দলের দাবি করা ‘ভুয়ো ভোটার’-দের তালিকা কমিশন দফতরে জমা দিয়েছে। সেই সঙ্গে কমিশনকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তৃণমূলের থেকে ১৭ লাখ ভোট কম পেয়েছিল। আর ‘ভুয়ো ভোটার’-এর সংখ্যাও সমান সমান। বুধবার কমিশন দফতরে এই অভিযোগ জানাতে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং দলের দুই নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও শিশির বাজোরিয়া। কমিশন দফতর থেকে বার হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের ৪২টা লোকসভা এলাকার ভোটার তালিকায় কোন কোন নাম ভুয়ো তা জানিয়ে ১৪,২৬৭ পাতার তালিকা জমা দিয়েছি। একটি পেন ড্রাইভেও সব তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে।’’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ এলে সেখানেও এই অভিযোগ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু। তবে নির্বাচন কমিশন এখনই কোনও পদক্ষেপ করছে না এই অভিযোগ নিয়ে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত অভিযোগগুলি জেলা ভিত্তিক ভাগ করে সব জেলার নির্বাচনী আধিকারিককে পাঠানো হবে। এর পরে তাঁরা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্টের উপরেই নির্ভর করছে কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত, এর আগেও এমন অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়েছিল বিজেপি। তবে তখন মূলত নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছিল। এ বার বিজেপি তথ্য সহ ‘ভুয়ো ভোটার’-এর অভিযোগ জানাল। নির্বাচনের আগে যেন তালিকা নির্ভুল করা যায় সে আর্জিও কমিশনে জানিয়েছেন শুভেন্দুরা।
তবে এমন অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, ‘‘বিজেপির মুখে এ সব কথা মানায় না, মিথ্যাচার এবং চটকদারি রাজনীতি করে শুভেন্দু অধিকারী বাজারে টিকে থাকতে চান। নির্বাচনে মানুষের রায়ে পরাজিত হয়ে সেটা মেনে নিতে চায় না। সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশে রাজ্যসভা নির্বানচন দেখিয়ে দিল ক্ষমতার জন্য বিজেপি কত নীচে নামতে পারে। মতুয়াদের ভোট দিতে না দেওয়ার জন্য আধার বাতিলের মতো কাজ করছে।’’