সোমবার দুর্গাপুরে ভিড়িঙ্গি কালীমন্দিরে পুজো দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা এমএএমসি খোলার বিষয়ে কোনও আশার আলো দেখাতে পারলেন না বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। উল্টে, লাভ না হলে সেই কারখানা সরকার চালাবে কেন, সেই প্রশ্ন তুললেন তিনি। এ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
খনির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উৎপাদনের জন্য ১৯৬৫ সালে এমএএমসি কারখানা চালু হয় দুর্গাপুরে। রুগ্ণ কারখানা ২০০২ সালের ৩ জানুয়ারি বন্ধ হয়ে যায়। ফের কারখানা চালু করার জন্য তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ বিইএমএল, সিআইএল এবং ডিভিসি কনসোর্টিয়াম গড়ে। ২০১০ সালের ১১ জুন কলকাতা হাই কোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ একশো কোটি টাকা দর দিয়ে এমএএমসি-র দায়িত্ব পায় কনসোর্টিয়াম। কারখানার নতুন নাম হয় এমএএমসি ইন্ডাস্ট্রিজ় লিমিটেড (এমএএমসিআইএল)। তিন সংস্থা মিলে কারখানা চালুর জন্য একটি টাস্ক ফোর্সও গড়ে। কিন্তু কারখানা চালুর স্পষ্ট কোনও উদ্যোগ এখনও নজরে আসেনি বলে অভিযোগ শহরবাসীর।
বিরোধীদের অভিযোগ, গত ৫ বছর ধরে বর্ধমান-দুর্গাপুরে বিজেপির সাংসদ থাকা সত্ত্বেও এমএএমসি কারখানা খোলার বিষয়টি সংসদে ওঠেনি। কারখানা খোলার বিষয়ে কোনও উদ্যোগ হয়নি। সোমবার সকালে এমএএমসি টাউনশিপে প্রাতর্ভ্রমণের সময় এ বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এমন বহু রুগ্ণ কারখানা পশ্চিমবঙ্গে আছে। হাজার হাজার আছে। তার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সমস্যাটা তো আর আজকের নয়। সিপিএম যখন ক্ষমতায় ছিল, তারা কী করেছে? তৃণমূল ১২ বছর ধরে কী করেছে?’’ এর পরেই তিনি দাবি করেন, লোকসান করে কারখানা চালানো কেন্দ্রের নীতি নয়। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের করের টাকা দিয়ে কারখানা চালানো সরকারের উদ্দেশ্য নয়। যদি লাভ না হয় সেটা সরকার চালাবে কেন?’’
জেলা তৃণমূল সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দিলীপ ঘোষের জানা উচিত, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সংস্থা অধিগ্রহণ করতে পারে না। রাজ্যের কাছে দু’হাত তুলে আত্মসমর্পণ করে দিন। দেখুন রাষ্ট্রায়ত্ত সব বন্ধ কলকারখানা খুলে যাবে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার এমএএমসি কারখানা না খোলার জন্য বিজেপি ও তৃণমূল, দুই দলকেই দায়ী করেন। তাঁর দাবি, ‘‘যে সময়ে এমএএমসি কারখানা বন্ধ হয় তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। সেই সরকারের মন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারখানা খোলার আর্জি জানিয়ে বহু চিঠি পাঠান জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বর্তমান কেন্দ্র ও রাজ্য, কোনও সরকারই কারখানা খুলতে উদ্যোগী হয়নি।’’