বিনয় তামাং। ছবি: সংগৃহীত।
কোনও অঘটন না ঘটলে দার্জিলিং লোকসভা আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হচ্ছেন বিনয় তামাংই। আজ, সোমবার বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতার নিরিখে কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার কথা রয়েছে। সেই তালিকায় পাহাড়ের অন্যতম গোর্খা প্রতিনিধি হিসেবে বিনয়ের দিকেই পাল্লা ভারী বলে দলের প্রদেশ সূত্রেই ইঙ্গিত মিলছে কয়েক দিন ধরে। কিন্তু এরই মধ্যে পাহাড়ে ভেসে উঠেছে হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডের নাম।
হামরো পার্টি সূত্রের খবর, বাম ও কংগ্রেসের সমর্থনে একজন নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর ব্যাপারে সওয়াল করেছেন অজয় এডওয়ার্ড। দলীয় সূত্রেই খবর, গত কয়েকদিন ধরে নিজের প্রার্থিপদের কথা প্রকাশ্যে না বললেও বাম ও কংগ্রেসের সর্বসম্মতিক্রমে একজন প্রার্থীর জন্য দিল্লিতে দরবারও করেছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দফতরেও যোগাযোগ করেছেন অজয়। এআইসিসি রাজ্য ও জেলার পাঠানো নাম, পাহাড়ের নেতা বিনয় তামাংয়ের নাম এই আসনের জন্য মোটামুটি চূড়ান্তই। সে ক্ষেত্রে অজয় জোট করতে বা কংগ্রেস প্রার্থী হতে চাইলে আলোচনা হতে পারে বলে কংগ্রেসের তরফে পাল্টা প্রস্তাব দেওয়া হয়। রবিবার রাত অবধি বিভিন্ন স্তরে দুই তরফে কথাবার্তা চলেছে বলে দাবি। যদিও এ দিন রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুয়ায়ী, অজয়ের সঙ্গে সরাসরি সমঝোতা না করে বিনয়ের নামেই ‘সিলমোহর’ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হামরো পার্টির সভাপতি তথা জিটিএ সদস্য অজয় বলেন, ‘‘পাহাড়ের জন্য আমরা একজন সর্বসম্মত প্রার্থী চাইছি। সেই প্রার্থীকে কংগ্রেস এবং সিপিএম সমর্থন করতে পারে। আমাদের দল তো থাকবেই। দিল্লিতে কয়েক জায়গায় কথা হয়েছে। দেখা যাক, কী পরিস্থিতি দাঁড়ায়।’’ তিনি নিজে প্রার্থী হতে পারেন বলে দলীয় স্তরে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে এখনই কিছু বলতে চাননি অজয়।
তবে অজয়কে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী করা হোক বা না হোক, কংগ্রেসের তরফের একাংশ তাঁকে পাশে পেতে সর্বদা যোগাযোগ রাখছেন। দলের পাহাড়ের দায়িত্বে থাকা বিনয়ের সঙ্গেও অজয়ের সম্পর্ক ভালই। পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন, বিনয় প্রার্থী হলে অজয়ের সমর্থন করতেও পারেন। কিন্তু বিনয়ের বিপক্ষে পাল্টা তত্ত্বও রয়েছে পাহাড়ে। কারণ, বিমল গুরুং করবেন না বলেই পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল মনে করছে। সেখানে অজয়কে দাঁড় করানো গেলে গুরুংও অজয়ের পাশে থাকতে পারেন। এতে কংগ্রেস, সিপিএম, হামরো পার্টি এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে শক্তিশালী তৃতীয় ফ্রন্ট পাহাড়ে তৈরি হয়ে যেতে পারে বলে দাবি। যদিও এ নিয়ে সরাসরি কেউই মুখ খুলতে চাননি। গুরুং শিবিরের নেতাদের একাংশ আপাতত দিল্লিতে আছেন। কংগ্রেস, বিজেপি দুই শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ নিয়ে গুরুং শিবির থেকেও কেউ কোনও মন্তব্য করেননি।
কংগ্রেসের প্রদেশ নির্বাচনী কমিটির সদস্য সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্তরে আলোচনা চলছে। কংগ্রেস পাহাড়ের অনেককে এক জোট করে নিয়ে চলার পক্ষপাতী। সমঝোতা হলে ভাল। নইলে আমাদের প্রার্থী ঘোষণা হয়ে যাবে।’’