ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষের নির্বাচনী প্রচার। এই মিছিলকে ঘিরে বাসন্তী হাইওয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শনিবার। ছবি: সামসুল হুদা।
তৃণমূলের মিছিলের জেরে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে রইল বাসন্তী হাইওয়ে। ঘটকপুকুর চৌমাথায় বাসন্তী হাইওয়ে কার্যত বন্ধ করে দিয়ে পথসভা করল তৃণমূল। তীব্র যানজটে নাকাল হলেন বহু মানুষ।
শনিবার যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষের সমর্থনে ঘটকপুকুর রিলায়েন্স পেট্রল পাম্প থেকে ঘটকপুকুর চৌমাথা পর্যন্ত মিছিল হয়। প্রার্থী ছাড়াও ছিলেন দলের নেতা শওকত মোল্লা, শাহজাহান মোল্লা, বাহারুল ইসলাম, আহসান মোল্লা।
রাস্তা আটকে তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচি প্রসঙ্গে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রচার করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, তা দেখা উচিত। মানুষের সমস্যা করে বাসন্তী হাইওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা কী ভাবে আটকে দিয়ে সভা করল তৃণমূল? পুলিশ কী ভাবে অনুমতি দিল? এরা ক্ষমতায় থেকে ভাবছে, মানুষের অসুবিধা দেখার দরকার নেই। এরা ভাবছে, চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে!’’
ভাঙড়ের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীকে কটাক্ষ করে সায়নী বলেন, ‘‘আমি অভিনেত্রী হয়েও নওসাদের থেকে বেশি রাজনীতি করি। আপনারা আপনাদের বিধায়কের থেকে কী সুবিধা পেয়েছেন? উনি এসির ঠান্ডা ঘর থেকে বেরিয়ে কত দিন মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে রাজনীতি করেন? আমার মনে হয় না, ভাঙড়ের মানুষ আগে যে ভুল করেছে, তা আর করবে।’’
এ বিষয়ে নওসাদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওরা মানুষের কথা ভাবে না। তা না হলে রমজান মাসে এ ভাবে বাসন্তী হাইওয়ে বন্ধ করে মিটিং, মিছিল করত না। বিজেপি যেমন বিভাজনের রাজনীতি করে, তেমনই তৃণমূল বিভাজনের ভয় দেখিয়ে ভোট চায়।’’
বাসন্তী হাইওয়ে বন্ধ করে সভা করা প্রসঙ্গে ভাঙড়-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শাহজাহান মোল্লা পরে বলেন, ‘‘আমরা তিনটি অঞ্চল নিয়ে এই মিছিল ও পথসভার আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু এত মানুষের ঢল নামবে, বুঝতে পারিনি। যে কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। যদি মানুষের সমস্যা হয়ে থাকে, সে জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।’’ সায়নী পরে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ‘‘বিরোধীদের অভিযোগ করা ছাড়া আর কিছু আছে কি!
মিটিং-মিছিল হলে জনগণের সমর্থনেই হচ্ছে। বিরোধীদের বলুন, অভিযোগ না করে নিজেদের প্রচারে মন দিতে।’’
এ দিন সকাল থেকে ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ১ পঞ্চায়েতের আশ্রম মোড় থেকে বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের কাঁঠালবেড়িয়া পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তায় হেঁটে প্রচার সেরেছেন যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই দুই পঞ্চায়েত এলাকায় ভোট হয়নি। সিপিএমের দাবি, সে সময়ে তৃণমূল ব্যাপক সন্ত্রাস করে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। সৃজনের সঙ্গে প্রচারে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ, রশিদ গাজি।