ক্ষোভের মুখে দিলীপ ঘোষ। সোমবার দুর্গাপুরের পলাশডিহায়। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশডিহায় সোমবার সকালে ‘চায়ে পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে গিয়ে দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের (ডিএসপি) উচ্ছেদ নোটিস পাওয়া বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়েন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। বাসিন্দাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন দিলীপ।
সকালে দিলীপ বিধাননগরে প্রাতঃভ্রমণ সেরে পলাশডিহার চা চক্রে যোগ দেন। সঙ্গে ছিলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দোপাধ্যায়, চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। সেখানে স্থানীয় কৃষ্ণা দে নামে এক মহিলা আচমকা উচ্ছেদ নিয়ে সরব হন।
দুর্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিএসপি সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য পলাশডিহা-সহ বিভিন্ন জায়গার প্রায় ১৫ হাজার অবৈধ বসবাসকারীকে উচ্ছেদ নোটিস পাঠিয়েছে। পুনর্বাসনের দাবিতে বাসিন্দারা আন্দোলন করছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিধায়ক লক্ষ্মণ তাঁদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এ দিন লক্ষ্মণের সামনেই কৃষ্ণা বলেন, “আমাদের যে কোনও দিন উঠিয়ে দেবে। লক্ষ্মণদা বলেছেন, ‘চিন্তা নেই’। কিন্তু আমরা কোন ভরসায় বাড়িঘর করব? আমাদের লিখিত দিতে হবে।” স্থানীয় বিজেপি সমর্থকেরা তাঁকে বলেন, “কেউ উঠিয়ে দিয়েছে কি? দেয়নি তো?” দিলীপ বলেন, “কেউ ওঠায়নি তো আপনাকে? ভয় পাবেন না।” এর পরেই লক্ষ্মণ বলেন, “আমি এসেছিলাম তো আপনাদের কাছে।” কৃষ্ণা অবশ্য তাঁর দাবিতে অনড় থাকেন।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই ঘটনার পরে বিজেপি সমর্থকদের কেউ কেউ তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘তৃণমূল হটাও বাংলা বাঁচাও’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করে দেন। তাঁদের দাবি, কৃষ্ণা তৃণমূলের হয়ে কথা বলছেন। যদিও কৃষ্ণা দাবি করেন, তিনি সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি সব দলের নেতাদেরকেই তাঁদের সমস্যার কথা বলেছেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
তিনি বলেন, “উনি (দিলীপ) কেন্দ্রের লোক। উনি বললেন, দেখছি। তবে এ রকম তো সবাই বলেন। আমরা প্রায় ৭০ বছর ধরে রয়েছি। জায়গা নিয়ে লিখিত দেওয়া হোক, আমাদের এখান থেকে ওঠানো হবে না।”
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। তাই উচ্ছেদ নোটিস পাওয়া বাসিন্দাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে ব্যবহার করার জন্য পলাশডিহার মতো একটি জায়গা বেছে নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেখানকার বাসিন্দারা জবাব দিয়ে দিয়েছেন।”