মেমারিতে প্রার্থী অসীম সরকারের সঙ্গে অমিত শাহ। ছবি: উদিত সিংহ।
তিনি যে মাঠে সভা করলেন, সেই এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা মতুয়া সম্প্রদায়ের। সেখানেই অনুপ্রবেশ ও সিএএ নিয়ে সরব হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার বর্ধমানের মেমারির বিষ্ণুপুরের মাঠে সন্ত্রাস ও দুর্নীতি প্রসঙ্গেও তৃণমূলকে বেঁধেন তিনি।
এই কেন্দ্রের প্রার্থী অসীম সরকারের সমর্থনে সভা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “রামমন্দির হল, ওঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। মমতাদিদিকে দেওয়া হয়েছিল। ভাইপোকেও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা যাননি। কেন যাননি জানেন? কারণ অনুপ্রবেশকারীদের ভয় পান।” ভোটব্যাঙ্কের কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুপ্রবেশ আটকাবেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শাহের দাবি, ‘‘অসমে বিজেপি সরকার হয়েছে, অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সে দিন আর দূর নয় যখন এখানে বিজেপি সরকার হবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, পাখিও ঢুকতে পারবে না।”
মতুয়া মহাসঙ্ঘের দাবি, বর্ধমান পূর্ব লোকসভায় ২৮% ভোটার মতুয়া সম্প্রদায়ের। এই লোকসভার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের ভাগ্য মতুয়া ভোটের উপরে নির্ভরশীল। জামালপুর-মেমারিতে আধার কার্ড বাতিলের চিঠিও পেয়েছিলেন অনেকে। এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় যে হিন্দু, জৈন, শরণার্থীরা এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত কি না? মমতাদিদি সিএএ-র বিরোধিতা করছেন। বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পেলে আপনার কীসের সমস্যা? ওঁর এটাই সমস্যা, কারণ তাতে ওঁর অনুপ্রবেশকারী ভোটব্যাঙ্ক ক্ষুণ্ণ হবে।’’ বাধা সত্ত্বেও প্রত্যেক শরণার্থীকে মোদী সরকার নাগরিকত্ব দেবে বলেও দাবি করেন তিনি।
সভায় এসেছিলেন মেমারির শম্ভুনাথ মণ্ডল, অসীমা বৈদ্যরা। তাঁদের দাবি, “কেন্দ্র সরকার নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য শর্ত চাপিয়েছে। আমরা নিঃশর্তে নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। তবে বিজেপি আশ্বাস দিয়েছে ভোটের পরে সরলীকরণ হবে।’’
তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়েও সরব হন শাহ। তিনি বলেন, “দিদি আর তাঁর ভাইপো বিজেপিকে ভয় পান। আমাদের নেতাদের হোটেল পান না। গাড়ি পান না। হোটেল ‘বুকিং’ হলেও মমতাদিদির গুন্ডারা বাতিল করে দেন। কিন্তু বিজেপির কার্যকর্তারা ভয় পান না। দিদি যত পারুন সন্ত্রাস করে নিন। এ বার বিদায় নিশ্চিত।” ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে খুন হওয়া বিজেপি কর্মীদের নাম করেন তিনি। বলেন, “যারা এই খুন করেছেন, আমাদের সরকার তাদের পাতাল থেকেও খুঁজে বার করে জেলে ভরবে। আমাদের কর্মীদের চরস-গাঁজার মামলা দেওয়া হয়, কোর্ট তাঁদের নির্দোষ বলে ছেড়ে দেয়। মমতাদিদির লজ্জা হওয়া উচিত।” সন্দেশখালি নিয়েও সরব হন তিনি।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের পাল্টা দাবি, “অনুপ্রবেশ নিয়ে আত্মঘাতী মন্তব্য করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুপ্রবেশ আটকানোর দায়িত্ব সীমান্তরক্ষা বাহিনীর। উনি দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।” মণিপুরের সন্ত্রাস, উত্তরপ্রদেশের নারী নির্যাতন, সাক্ষী মালিক থেকে ব্রিজভূষণের প্রসঙ্গে তুলে কুণাল বলেন, “কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ছেন। দুর্নীতির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁরাই এখন বিজেপিতে।”