অমিত শাহ। ফাইল চিত্র। ফাইল চিত্র।
মোদীজি তৃতীয় বার ক্ষমতায় এলে উত্তরবঙ্গে এমস হবে। রায়গঞ্জের সভা থেকে আশ্বাস দিলেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “রায়গঞ্জে এমসের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মমতাদিদি তা রুখে দিয়েছেন। পুরো উত্তরবঙ্গে এমন নেই। মোদীজির গ্যারান্টি, ৩০ আসন জিতিয়ে দিন, আমরা উত্তরবঙ্গের জন্য আলাদা এমস বানানোর কাজ শুরু করব।”
‘‘নরেন্দ্র মোদী দেশের গরিবদের জন্য গত ১০ বছর ধরে কাজ করে গিয়েছেন। ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিয়েছেন মোদী। ১২ কোটির বেশি শৌচালয়, ৪ কোটির বেশি মানুষকে ঘর, ১০ কোটি মানুষকে উজ্জ্বলার গ্যাস, ১৪ কোটি মানুষকে পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মোদী’’, বললেন শাহ।
তৃণমূলের নেতাদের ঘর দেখুন, যাঁরা ঝুপড়িতে থাকতেন, তাঁরা এখন চার তলায় থাকেন। বড় বড় গাড়িতে ঘোরেন। এই টাকা আপনাদের। বাংলাকে যদি হিংসা থেকে মুক্ত করতে হয়, অনুপ্রবেশ রুখতে হয়, শরণার্থীদের নাগরিকতা দিতে হয়, তবে একমাত্র রাস্তা হল নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী বানানো।
‘‘হাই কোর্ট চাকরি বাতিল করেছে সোমবার। ওঁদের এক মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ৫১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। কাটমানি, চাকরি নিয়ে দুর্নীতি বাংলায় আটকানো প্রয়োজন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা হয় বাংলায়। এর কারণ তৃণমূল কংগ্রেস।’’ রায়গঞ্জে বললেন শাহ।
‘‘বাংলায় অনুপ্রবেশ বন্ধ হওয়া উচিত কি না বলুন,’’ প্রশ্ন করেন শাহ। ‘‘মমতাদিদি এই অনুপ্রবেশ আটকাতে পারবেন না। কেউ যদি পারেন, তিনি হলেন নরেন্দ্র মোদী।’’ রায়গঞ্জের সভা থেকে বললেন শাহ।
‘‘মমতাদিদি মোদীজির প্রকল্প আটকে রাখেন। তাঁর ভয়, যদি মোদীজির প্রকল্প চালু হয় এখানে, তা হলে বাংলার মানুষ মোদীজির হয়ে যাবে।’’ বললেন শাহ।
‘‘আপনারা ১৮ আসন দিয়েছেন। মোদীজি রামমন্দির দিয়েছেন। আপনারা এ বার ৩৫ আসন দিন। অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেব।’’ বাংলায় বিজেপি ৩০-৩৫ আসন পাবে বলেও দাবি করেন শাহ। ‘‘রায়গঞ্জও এই ৩০-৩৫ আসনের মধ্যে হওয়া চাই।’’ বলেন শাহ।
রায়গঞ্জের জনসভায় পৌঁছলেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “আজ হনুমান জয়ন্তী।”
মালদহ উত্তর এবং দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু এবং শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর সমর্থনে মঙ্গলবার ইংরেজবাজারে রোড-শো করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দুর্নীতি, অনুপ্রবেশ নিয়ে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেন শাহ। তিনি বলেন, “ মমতাদিদি নিজের মন্ত্রীদের দুর্নীতি ঠেকাতে পারেননি।” চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গও ওঠে তাঁর বক্তৃতায়। শাহ বলেন, “চাকরি বাতিল নিয়ে যা নির্দেশ তা তো হাই কোর্টের। এর পিছনে বিজেপির ষড়যন্ত্র কোথায়?”
দলীয় কর্মী-সমর্থদের উদ্দেশে শাহ বলেছেন, “ইংরেজবাজার থেকে দেড় লক্ষেরও বেশি লিড দিতে হবে।”
লোকসভার নির্বাচনী প্রচারে প্রায়ই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কেউ না কেউ আসছেন। লোকসভা ভোট ঘোষণার পর রাজ্যে তিন দিন এসে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভোট ঘোষণার আগেও এসেছেন তিনি। অনুরাগ ঠাকুর থেকে রাজনাথ সিংহ— কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা একাধিক সভা করছেন বাংলায়। তবে ভোট ঘোষণার পর শাহ এক বারই রাজ্যে এসেছিলেন। বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের সমর্থনে সভা করে গিয়েছেন তিনি।
রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে ভোট রয়েছে দ্বিতীয় দফায়। ২৬ এপ্রিল হবে ভোটগ্রহণ। এ বার এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে কার্তিক পালকে। ২০১৯ সালে এই আসনে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন দেবশ্রী চৌধুরী। পরে তাঁকে নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীও করা হয়েছিল। তবে এ বার বিজেপি দেবশ্রীকে আর এই আসন থেকে টিকিট দেয়নি। দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসন থেকে প্রার্থী করা হয়েছে তাঁকে।
বালুরঘাটের পর মঙ্গলবার রায়গঞ্জের করণদিঘিতে ভোটপ্রচারে এলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে একটিই সভা করেছেন তিনি। বালুরঘাট আসনে গত সপ্তাহেই প্রচার সারেন শাহ। গত রবিবার রাজ্যে এলেও খারাপ আবহাওয়ার জন্য দার্জিলিঙের সভাস্থলে যেতে পারেননি। মঙ্গলবার আবার তিনি এলেন রাজ্যে। মালদহের শ্যামাপ্রসাদ মোড়ে তিনি রোড-শো করেন।