অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি পেয়ে পঞ্জাবের অমৃতসরে প্রচারে গিয়ে অরবিন্দ কেজরীওয়াল বলেছিলেন, ‘‘আমার (আম আদমি পার্টি) পক্ষে ভোট দিলে, আমায় আর জেলে যেতে হবে না।’’ সুপ্রিম কোর্ট গুরুত্ব না দিলেও কেজরীওয়াল ওই কথা বলে আদালত অবমাননা করেছেন বলে আজ ফের সরব হলেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ।
আপ-শাসিত দিল্লি ও পঞ্জাবের লোকসভা আসনগুলিতে ভোট হওয়ার আগে স্রেফ নির্বাচনী প্রচার করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কেজরীওয়ালকে জামিন দেওয়াটা যে বিজেপি ভাল ভাবে নেয়নি, তা গোড়া থেকেই স্পষ্ট। বিজেপি মনে করছে, এর ফলে আপের পক্ষে সহানুভূতির ঝড় উঠতে পারে। কেজরীওয়ালের মন্তব্যকে আদালতের অবমাননা বলে গোড়াতেই সরব হয়েছিলেন শাহ। কিন্তু গত কাল এক মামলায় ইডি আপ আহ্বায়কের ওই মন্তব্যের কথা উল্লেখ করলে সুপ্রিম কোর্ট তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, ‘‘কেজরীওয়াল যা বলেছেন, তা তাঁর অনুমান মাত্র। এ ক্ষেত্রে আদালতের কিছু করার নেই।’’
আজ এক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে শাহ বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের এর চেয়ে বড় অবমাননা আর কিছুতেই হতে পারে না। এর পর কি (নির্বাচনে) জয়-পরাজয়ের ভিত্তিতে অপরাধের বিচার করা হবে? তবে আমি এ কথা বলিনি। কেজরীওয়াল বলেছেন।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, তিনি কেজরীওয়ালের মুখ থেকে বিষয়টি শোনেননি। খবরের কাগজে পড়েছেন। শাহের কথায়, ‘‘যদি কেজরীওয়াল সত্যিই ওই কথা বলে থাকেন, তা হলে সেটি সুপ্রিম কোর্টের কর্মপদ্ধতি নিয়ে খুবই ভুল মন্তব্য।’’ সুপ্রিম কোর্ট কেজরীওয়ালকে জামিন দিয়ে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অতীতের সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছিলেন শাহ। আজ অবশ্য অন্তর্বর্তী জামিন প্রসঙ্গে শাহ বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু যে ভাবে আপ নেতৃত্ব ওই রায়কে কেজরীওয়ালের জয় হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন, তা ঠিক নয়। কারণ, মূল আবেদনটিতে কেজরীওয়ালের গ্রেফতারিকে বলা হয়েছিল অবৈধ। শীর্ষ আদালত সেটি খারিজ করে দিয়েছে। পরবর্তী ধাপে কেজরীওয়ালের তরফে জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত তা-ও খারিজ করে দেয়। তার পরে ভোটের প্রচারের জন্য যে জামিনের আবেদন করা হয়, তার ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী জামিন দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু ২ জুনের মধ্যে কেজরীওয়ালকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’’ আপ শিবিরের দাবি, জেল থেকে বেরোনোর পরে কেজরীওয়াল যেখানে যাচ্ছেন, অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছেন। শাহ তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় কেজরীওয়াল যেখানে যাবেন, সেখানেই মানুষ তাঁর আবগারি দুর্নীতিতে যুক্ত থাকা নিয়েই আলোচনা করবেন। এমনকি পঞ্জাবেও যখন কেজরীওয়াল প্রচারে যাচ্ছেন, তখন মানুষ বড় মাপের বোতল নিয়ে প্রচারসভায় উপস্থিত হচ্ছেন।’’
বিরোধীদের দাবি, প্রথম চার দফায় আশানুরূপ ফল হয়নি বিজেপির। ফলে টানা তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসা কঠিন তাদের পক্ষে। উল্টে ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে দেশ জুড়ে যে হাওয়া রয়েছে, তাতে তারা সরকার গড়ার পর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলেই আশাবাদী বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে বিজেপির কাছে বিকল্প কোনও পথ (প্ল্যান বি) রয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হলে অমিত শাহ বলেন, ‘‘বিজেপির প্ল্যান বি-র কোনও প্রয়োজন নেই। আমি নিশ্চিত, নরেন্দ্র মোদী বিরাট ভাবে জিতবেন। গোটা দেশ নিরাপদে থাকতে চায়। চায় উন্নত ও আত্মনির্ভর হতে, যাতে বিদেশের মাটিতে দেশের ছবি শুধরোয়।’’