—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভোট গণনাতেও বিজেপির সহায়ক সঙ্ঘ। এবং বিজেপি এজেন্টদের তাঁরা পইপই করে একটা কথাই বলছেন, গণনা শেষ না-হওয়া পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে। গণনাকেন্দ্র ছাড়া যাবে না।
আগামী ৪ জুন ভোট গণনা। সে দিন যাঁরা গণনাকেন্দ্রে বিজেপির এজেন্ট হবেন, এর মধ্যে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শাখা সংগঠন ‘সহকার ভারতী’। সরাসরি ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে না থাকলেও এই ব্যাপারে বিজেপির ভরসা সঙ্ঘের এই শাখা সংগঠনটি, যারা মূলত কো-অপারেটিভ সংক্রান্ত নানা বিষয় পরিচালনা করে থাকে। সূত্রের খবর, রাজ্যের ৪২টি আসনেই এ বার বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট ও কাউন্টিং এজেন্টদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন সহকার ভারতীর প্রশিক্ষকেরা।
সূত্রের খবর, গণনার দিনের জন্য প্রতিটি লোকসভা থেকে ১৮০ জন বিজেপি কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৯ জন প্রশিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিন জনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিজের শহর কাঁথির বাসিন্দা। দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক তথা বিজেপির কাঁথি সংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপকুমার দাস মানছেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে পোলিং এজেন্টেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এখন ফের রাজ্য থেকে এক জন করে প্রশিক্ষক পাঠানো হচ্ছে। তাঁরাই কাউন্টিং এজেন্টের প্রশিক্ষিত করবেন।’’
গত ২৫ মে ষষ্ঠ দফার ভোটের দিন থেকেই শুরু হয়েছে কাউন্টিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। ইতিমধ্যে হাওড়া, ব্যারাকপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৪ জুন ভোট গণনার আগে বাকি লোকসভা কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ সারা হবে। পূর্ব মেদিনীপুরে দু’টি লোকসভা। তার মধ্যে তমলুকে প্রশিক্ষণ পর্ব চলেছে বুধবার। কাঁথির প্রশিক্ষণের দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। তবে জানা গিয়েছে, কাঁথিতে বিজেপির কাউন্টিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছেন প্রভাতকুমার কলেজের এক অধ্যাপক।
ঠিক কী পাঠ দেওয়া হচ্ছে এই প্রশিক্ষণে? সূত্রের খবর, ভোট গণনার সময় দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে এজেন্টদের। যতগুলি টেবিলে ইভিএম এবং পোস্টাল ব্যালট গোনা হবে, সেই মতো ভাগ করে খুঁটিনাটি বোঝানো হচ্ছে বিজেপি কর্মীদের। আর বারবার সতর্ক করা হচ্ছে, ‘পুরো গণনা প্রক্রিয়া না মেটা পর্যন্ত কোনও ভাবেই গণনাকেন্দ্র ছেড়ে যাওয়া যাবে না।’
কিন্তু আরএসএস তো মূলত সামাজিক কর্মসূচির জড়িয়ে। তা হলে ভোট সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ তারা দিচ্ছে কী করে? সঙ্ঘের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কার্যবাহক তুষার দাসের জবাব, ‘‘সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সব দিক দেখেই প্রশিক্ষক বেছেছেন। যাঁরা উপযুক্ত তাঁদেরই নিয়োগ করা হয়েছে।’’ সঙ্ঘের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক প্রশিক্ষক বললেন, ‘‘তমলুকের পাশাপাশি আমাকে উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সঙ্ঘ থেকে আমাদের নাম সুপারিশ করে পাঠানো হয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বের কাছে। তাঁরাই সবটা চূড়ান্ত করছেন।’’
তবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বিজেপির সংগঠন
অত্যন্ত দুর্বল। তাই হয়তো তাঁরা সঙ্ঘকে কাজে লাগিয়েছেন। তবে তৃণমূল নিজের সংগঠনেই বলীয়ান। তাই কে, কোথায়, কী করছে তাতে আমরা এতটুকু শঙ্কিত নই।’’