সিন্ডিকেটের আড়ালে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে রাজারহাট-নিউটাউন এলাকায় ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল শনিবার। দু’পক্ষের মারামারিতে ৮-৯ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ২ জনকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশের পাশাপাশি এলাকায় নামানো হয় র্যাফ এবং কমব্যাট বাহিনী। ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
ইমারতি মালপত্র সরবরাহ করা নিয়ে এই এলাকায় দুই গোষ্ঠীর কোন্দল কোনও নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও বহু বার এ নিয়ে গণ্ডগোল, হুমকি, মারামারি, এমনকী খুনের অভিযোগ উঠেছে বার বার। মাঝে নির্বাচন এসে যাওয়ায় সাময়িক ভাবে বন্ধ ছিল এ সব। কিন্তু নির্বাচন পর্ব মিটতেই এ দিন ফের মাথা চাড়া দেয় সিন্ডিকেট রাজের বিবাদ। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, এলাকার সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং বিধায়ক সব্যসাচী দত্তর অনুগামীদের একটা অংশ এই গণ্ডগোলের সঙ্গে যুক্ত। বিধায়ক ও সাংসদ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। কাকলিদেবী বলেন, “আমি কিছুই জানি না। ব্যাপারটা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে যেটুকু জেনেছি, এই ঘটনায় আমাদের দলের কেউ যুক্ত নয়।” একই সুর শোনা গিয়েছে সব্যসাচীবাবুর গলাতেও। তিনি বলেন, “শুনেছি বাইরে থেকে কিছু লোকজন এসে এলাকায় আক্রমণ চালিয়েছে। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” তিনি জানান, ২০১১ সালের পর ফের নতুন করে এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটল।
কী হয়েছিল এ দিন?
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া-১-এর রামকৃষ্ণ পল্লিতে এ দিন সকালে একটি সিন্ডিকেটের অফিসে জনা পঁচিশেক কর্মী বসেছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে প্রায় আড়াইশো জনের একটি দল লাঠি, বাঁশ, শাবল নিয়ে সেখানে হামলা চালায়। অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বসে থাকা ওই কর্মীদেরও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ পৌঁছয়। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় নামানো হয় র্যাফ এবং কমব্যাট বাহিনী।
সাংসদ বা বিধায়ক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দিলেও দলেরই একাংশ এ নিয়ে সরব হয়েছে। রাজারহাট নিউটাউনের তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ আফতাবউদ্দিন বলেন, “এলাকা দখলের উদ্দেশ্যে বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের লোকজন হামলা চালিয়েছে।” ঠিক তার উল্টো সুর গেয়েছেন জ্যাংড়া হাতিয়াড়া-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য। তাঁর পাল্টা বক্তব্য: “কাকলি ঘোষদস্তিদারের অনুগামীরাই এ দিনের হামলা চালিয়েছে।”