চলছে জুটার অবস্থান বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
ক্লাস বাতিল না করেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবন চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হলেন শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সদস্যেরা। নির্দিষ্ট ক্লাস নেওয়ার ফাঁকে ফাঁকেই বুধবার দুপুর থেকে চলল পূর্বঘোষিত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি।
যাদবপুরে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জুটার তরফে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। গত শুক্রবার জমা দেওয়া শেষ স্মারকলিপিতে সংগঠনের তরফে বিভিন্ন দাবিদাওয়া জানানো হয়।
কী ছিল ওই স্মারকলিপিতে?
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দেশিকা জারি করেন, কোন শিক্ষক কতগুলি ক্লাস নিচ্ছেন তা লিখিত আকারে বিভাগীয় প্রধান এবং ডিনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রারকে প্রত্যেক দিন জানাতে হবে। স্মারকলিপিতে সেই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবি জানায় জুটা। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সমস্ত বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী আছেন, ব্যাগপত্র পরীক্ষার নামে তারা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের হেনস্থা করেন। শুধু তাই নয়, মাঝেমধ্যে তাঁরা শিক্ষকদের পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তুলে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। জুটার দাবি, এ বিষয়েও নজর দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। ওই দিন জুটা-র প্রতিনিধিরা রেজিস্ট্রারকে জানিয়ে দেন, মঙ্গলবারের মধ্যে এ সব বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা না জানানো হলে, বুধবার অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে। জুটার প্রতিনিধিরা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কিছু জানানো হয়নি। তাই এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ অরবিন্দ ভবনের সামনে শতরঞ্চি পেতে বিক্ষোভে বসে জুটা।
অবস্থান বিক্ষোভ চলাকালীন দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ জুটা-র এক প্রতিনিধি দল রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করে। কিন্তু রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের জানিয়ে দেন, শুক্রবারে জমা দেওয়া স্মারকলিপি তিনি উপাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী এ বিষয়ে তাঁকে আর কিছু জানাননি বলে দাবি করেন রেজিস্ট্রার। জুটার সদস্যদের দাবি, এর পর রেজিস্ট্রার তাঁদের বলেন, “এ বিষয়ে আমার আর কিছুই করণীয় নেই।” কথা না বাড়িয়ে বিক্ষোভস্থলে ফিরে আসে ওই প্রতিনিধি দল।
উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী যদিও এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। দুপুর সওয়া দু’টো নাগাদ তিনি অরবিন্দ ভবনের সামনে দিয়েই প্রবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু বিক্ষোভরত শিক্ষকদের সঙ্গে তিনি কোনও কথা বলেননি। পাশাপাশি, জুটার সদস্যরাও তাঁর সঙ্গে কোনও বাক্যালাপ করেননি। এ দিন তাঁরা জানিয়েছেন, গত ২১ অক্টোবর সংগঠনের তরফে যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে অভিজিতবাবুর নিয়োগ পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্যপালের কাছে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সম্মিলিত ওই শ্বেতপত্র ইউজিসি-র চেয়ারম্যান এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকেও পাঠানো হয়েছে বলে জুটার দাবি। এ দিন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জুটার অবস্থান বিক্ষোভ চলে।