ব্যাঙ্ক ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম শুভ্র রায়। তার বাড়ি সোনারপুর এলাকায়। শনিবার দুপুরে তাকে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সামনে থেকে ধরে কালীঘাট থানার পুলিশ। ধৃত ব্যক্তি কোনও প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত অক্টোবর মাসে সহজ কিস্তিতে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগায় ওই ব্যক্তি। যোগাযোগ করার জন্য তাতে ছিল একটি মোবাইল নম্বরও। পোস্টার দেখে সেখানে যোগাযোগ করেন কালীঘাটের রানি শঙ্করী লেনের বাসিন্দা মৌসুমী দেবরায়। পুলিশ জানিয়েছে, শুভ্র খুব সহজেই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে মৌসুমীদেবী তার হাতে বিভিন্ন ব্যক্তিগত নথি ও একটি ‘ব্ল্যাঙ্ক’ চেক দেন। এর কিছু দিন পরেই তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তখনই তাঁর সন্দেহ হয় শুভ্রর উপর। তিনি মোবাইলে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন ধরেনি শুভ্র। সে ফোনটি বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ। এর পরেই মৌসুমীদেবী কালীঘাট থানায় শুভ্রর নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, যে ঠিকানা দিয়ে শুভ্রর মোবাইলের সিম কার্ড নেওয়া হয়েছিল সেটি ভুয়ো। পুলিশ জানতে পারে, মৌসুমীদেবীর চেকটি ভাঙানো হয়েছিল নরেন্দ্রপুরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায়। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল, তাতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সেখানে এক সময়ে ভাড়া থাকত শুভ্র। তবে এখন সেখানে কেউ থাকে না। এক তদন্তকারী অফিসার এ দিন বলেন, “ব্যাঙ্ক থেকে জানতে পারি ওই ব্যক্তির ‘কেওয়াইসি’ (নো ইওর কাস্টমার বা গ্রাহক সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য) জমা দেওয়া নেই। ফলে আমরা ব্যাঙ্ককে অনুরোধ করি শুভ্রকে কেওয়াইসি জমা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে। আর সেই ফাঁদেই শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে প্রতারক।”
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে ধৃত শুভ্র হঠাৎই নরেন্দ্রপুরের ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কে যায় অন্য একটি চেক জমা দিতে। ব্যাঙ্ক থেকে খবর যায় কালীঘাট থানায়। পুলিশ এসে গ্রেফতার করে তাকে। তদন্তকারীদের দাবি, শুধু মৌসুমিদেবীই নন, ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে এর আগেও শুভ্র একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করেছে।