নৌকাই ভরসা বন্যা বিধ্বস্ত শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।
টানা এগারো দিন বন্ধ থাকার পর কাশ্মীরে ফের শুরু হল রেল চলাচল। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামতির পর সোমবার শ্রীনগর-বারামুল্লা পথে রেল পরিষেবা চালু হয়। এ দিন বেলা বারোটা নাগাদ বাদগাঁও থেকে বারামুল্লার উদ্দেশে একটি ট্রেন রওনা দেয়। উত্তর রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, গোটা উপত্যকা জুড়ে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত কয়েক দিনের বন্যা পরিস্থিতিতে ব্যাপক ভাবে বিঘ্নিত হয়েছে রাজ্যের রেল পরিষেবা। বেশ কয়েক জায়গায় জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে রেললাইন। অনেক জায়গাতেই রেললাইন এবং স্টেশনের উপর আশ্রয় নেন গৃহহারা মানুষ। দুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছতে জম্মু থেকে উধমপুর পর্যন্ত আপত্কালীন ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে উত্তর রেল। কাটরা, উধমপুর এবং জম্মু থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সে সব ট্রেনে প্রয়োজন মতো অতিরিক্ত কোচও লাগানো হচ্ছে। পাশাপাশি নয়াদিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতীয় রেলের তরফে হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে।
বন্যা বিধ্বস্ত উপত্যকায় জমে থাকা জল সরাতে ওএনজিসি-র ৩০টি পাম্পকে কাজে লাগানো হয়েছে। রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন, এ দিন থেকে শ্রীনগরের রাজবাগ, জওহর নগর এলাকায় জল সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।কাজ শুরু করেছে এই পাম্পগুলি। এই সব এলাকায় প্রায় আট থেকে দশ ফুট পর্যন্ত উঁচু পর্যন্ত জল জমে রয়েছে। তবে, বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। অন্য দিকে, জলস্তর নামতে শুরু করেছে ঝিলমে।
বন্যা এবং টানা কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত সীমান্তের ওপারও। পাকিস্তানে ইতিমধ্যেই বন্যার কারণে মৃত্যু হয়েছে প্রায় তিনশো জনের। দুর্গতের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ।
পাক জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ২০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে পঞ্জাব প্রদেশে। ৬৬ জন মারা গিয়েছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে। ধ্বংস হয়েছে দেড় লাখ একর জমির ফসল। ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বহু গ্রাম। এরই মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে শিয়ালকোট এবং গুর্জনওয়ালায়।