মোদীর কথাতেই মোদীকে রুখতে চাইছেন নীতীশ কুমার!
লোকসভা ভোটের আগে বিভিন্ন জনসভায় নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার ‘রেকর্ডিং’ সঙ্গে নিয়েই তাই বিহার সফরে বেরিয়েছেন জেডিইউ-এর এই শীর্ষনেতা। মোদীর পুরনো ভাষণ শুনিয়ে জনতাকে তাঁর প্রশ্ন: “বিদেশের ব্যাঙ্কে থাকা কালো টাকা দেশে ফিরল কি? বিহারের জন্য বিশেষ কী সাহায্য করল কেন্দ্র?”
বিধানসভা ভোটের ১১ মাস আগে বৃহস্পতিবার এই ছকেই মোদী তথা বিজেপি-র রথ রুখতে মাঠে নামলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটারদের মন জিততে শুরু করলেন দলের ‘সম্পর্ক-যাত্রা’।
এ দিন নীতীশের কর্মিসভা ছিল পশ্চিম চম্পারণে। ভিড়ে ঠাসা ময়দানে নরেন্দ্র মোদীকে তিনি সরাসরি আক্রমণ করেন। কালো টাকা দেশে ফেরাতে মোদীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা তোলেন নীতীশ। বক্তৃতা থামিয়ে টেপ-রেকর্ডার চালিয়ে দেন। মাইকে ভেসে ওঠে নরেন্দ্র মোদীর কণ্ঠস্বর: ‘বিদেশের ব্যাঙ্কে যে কালো টাকা রয়েছে, দিল্লির ক্ষমতা পেলে ১০০ দিনের মধ্যে তা দেশে ফিরিয়ে আনব। তাতে ভারতের প্রত্যেক নাগরিক ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে হাতে পাবেন।’ টেপ বন্ধ করেই প্রশ্ন তোলেন নীতীশ, “আপনারা চিনতে পারছেন কার আওয়াজ? নয়াদিল্লির মসনদে ১৫০ দিন ধরে বসে রয়েছেন মোদী। কোথায় গেল কালো টাকা?” প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে তিনি বলতে থাকেন, “মানুষ জানতে চাইছেন কবে টাকা পাওয়া যাবে? টাকাটা কি মোদীজি চেকে দেবেন, না কি নগদে?” হাততালিতে ফেটে পড়ে পশ্চিম চম্পারণের সভায় হাজির হাজার পাঁচেক মানুষ।
বিহারের জন্য বিশেষ মর্যাদার দাবিতে অনেক দিন ধরেই সরব নীতীশ। আসন্ন ভোটে তাঁর কাছে এটি বড় ‘অ্যাজেন্ডা’। এ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় লোকসভার প্রচারে মোদী কী বলেছিলেন, তা-ও শোনান নীতীশ। মাইকে ফের শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আপনারা আমাদের ক্ষমতায় আনলে বিহারের উন্নয়নে সব রকম সাহায্য করব। তা বিশেষ মর্যাদা হোক বা আর্থিক সহায়তা। বিহারের প্রতি আমি নিজে বিশেষ ভাবে নজর রাখব।’ টেপ থামিয়ে নীতীশ বলেন, “রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় আর্থিক বরাদ্দ দিন দিন কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় সড়ক নির্মাণেরও টাকা মিলছে না। কমেছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা। অর্থসঙ্কটের জেরে ইন্দিরা আবাস যোজনাও সমস্যায় পড়েছে।” মোদীর দিকে প্রশ্ন ছোঁড়েন নীতীশ, “একেই কি বিশেষ নজর দেওয়া বলে?” হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, “দিল্লির কাছ থেকে ভিক্ষা নেব না। লড়াই করে দাবি আদায় করব।”