পাভলভে প্রৌঢ়াকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ

সুহানা ইয়াসমিনের পরে কমলা মজুমদার। রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল ছবিটা আরও এক বার বেআব্রু হল। এসএসকেএমে ভর্তি ১২ বছরের সুহানার রক্তের প্রয়োজন ছিল। বাড়ির লোক রক্ত জোগাড় করা সত্ত্বেও তা দেওয়ার ‘সময় পাননি’ চিকিৎসকেরা। তাই ধুঁকে ধুঁকে মরতে হয়েছিল ওই কিশোরীকে। আর ষাট ছুঁই ছুঁই কমলা দেবীর মৃত্যু হল পাভলভ মানসিক হাসপাতালের ওয়ার্ডে। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। অভিযোগ, তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ১৭:৪৪
Share:

সুহানা ইয়াসমিনের পরে কমলা মজুমদার। রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল ছবিটা আরও এক বার বেআব্রু হল।

Advertisement

এসএসকেএমে ভর্তি ১২ বছরের সুহানার রক্তের প্রয়োজন ছিল। বাড়ির লোক রক্ত জোগাড় করা সত্ত্বেও তা দেওয়ার ‘সময় পাননি’ চিকিৎসকেরা। তাই ধুঁকে ধুঁকে মরতে হয়েছিল ওই কিশোরীকে। আর ষাট ছুঁই ছুঁই কমলা দেবীর মৃত্যু হল পাভলভ মানসিক হাসপাতালের ওয়ার্ডে। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। অভিযোগ, তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। মারল কে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওয়ার্ডের ভিতরে রোগিণীদের মধ্যে মারপিট চলছিল। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা। ঘটনাটি গত ২৭ নভেম্বরের। টানা ২৪ ঘণ্টা আহত অবস্থায় পাভলভেই পড়েছিলেন তিনি। ২৮ তারিখ তাঁকে ভর্তি করা হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। মঙ্গলবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। বেনিয়াপুকুর থানা মারফত খবর যায় কমলাদেবীর আত্মীয়দের কাছে। দেহ নিতে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে আসেন তাঁরা।

অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের ওয়ার্ডে নজরদারির কোনও ব্যবস্থাই থাকে না। মানসিক রোগীদের এক সঙ্গে রেখে দিয়ে অন্যত্র চলে যান নার্স এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা। রোগীরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করেন। তারই মাসুল গুণতে হয়েছে কমলাদেবীকে। তাঁর মেরুদণ্ডে এবং চোখে গুরুতর চোট লাগে।

Advertisement

হাসপাতালের সুপার গণেশ প্রসাদ অবশ্য নজরদারির অভাবের অভিযোগ স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “রোগিণীরা নিজেদের মধ্যে মারপিট করছিলেন। তার জেরেই ওই দুর্ঘটনা। কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গেই হস্তক্ষেপ করেছেন।” কিন্তু কর্মীরা হস্তক্ষেপ করা সত্ত্বেও কী ভাবে অমন গুরুতর আহত হলেন কমলাদেবী, সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

সল্টলেকের বাসিন্দা কমলা দেবী গত এপ্রিল মাসে পাভলভে ভর্তি হয়েছিলেন। চলতি মাসেই তাঁর হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার কথা ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরে কমলা দেবী স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হন বছরখানেক আগে। তিনি অবিবাহিতা ছিলেন। তাঁর বোন সুপ্তি ঘোষ এ দিন বলেন, “হাসপাতালের ডাক্তাররা দিদির চিকিৎসা খুব ভাল ভাবেই করছিলেন। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছিলেন দিদি। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল!” সুপ্তিদেবীর প্রশ্ন, “দিদিকে যখন অমন বেধড়ক মারা হচ্ছিস, তখন নার্স বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা কোথায় ছিলেন? কেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তারাই সব দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement