বিধাননগর কমিশনারেটের সামনে চলছে ঘেরাও। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য জুড়ে অব্যাহত রাজনৈতিক হানাহানি। বৃহস্পতিবার রাতে বাগুইআটি ও ব্যারাকপুর দু’জায়গাতেই বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে হামলার খবর পাওয়া গিয়েছে। এই হামলার ঘটনায় অভিযোগের তির শাসক দলের দিকে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ব্যারাকপুরে বিজেপির অবরোধের জেরে কৃষিমন্ত্রী পুর্ণেন্দু বসুর নাকাল হওয়ার ঘটনায় জগদ্দল থানার আইসি-সহ চার পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। বিজেপি দফতরে হামলার প্রতিবাদে এ দিন দুপুরে বিধাননগর কমিশনারেট ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নদিয়ার ফুলিয়াতে কৃষি বিভাগের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন কৃষিমন্ত্রী পুর্ণেন্দু বসু। ওই সময়েই কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের শ্যামনগর বাসুদেবপুর মোড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের অবরোধ কর্মসূচি চলছিল। সারদা কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়কে গ্রেফতার, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ও ঘোষপাড়া রোড সংযোগকারী ফিডার রোড সংস্কার-সহ নানা দাবিতে স্থানীয় বিজেপি নেতা তরুণ ব্রহ্মের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। পুলিশ জানায়, এই অবরোধ তোলা নিয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের বচসা শুরু হয়। মন্ত্রীর কনভয় পৌঁছনো মাত্র গাড়ি লক্ষ করে হামলা চালায় বিজেপি কর্মীরা। গাড়ির কাচ ভেঙে ফেলা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনায় ২০ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনার পরেই নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলে পাল্টা মিছিল ও পথসভা করে তৃণমূল।
ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছে বিজেপির বিক্ষোভ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই ব্যারাকপুর-বারাসত রোডের দেবপুকুরে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়। বাসুদেবপুরে বিজেপির অবরোধের ঘটনার জেরেই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা পার্টি অফিস ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির।
পাশাপাশি, ওই দিন রাতেই বাগুইআটির রঘুনাথপুর ও জগত্পুর দু’জায়গাতেই বিজেপির পার্টি অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাস বলেন, “রঘুনাথপুর পার্টি অফিসে বসেছিলাম। হঠাত্ই তৃণমূলের কিছু গুন্ডা আমাদের উপর হামলা করে। ওরা বলছিল এখানে পার্টি করা চলবে না।” তাঁর অভিযোগ, এই হামলার পরেই থানায় অভিযোগ জানাতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীরা ফের এসে পার্টি অফিস ভেঙে দিয়ে যায়। কর্মীদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। একই সময় রাজারহাট থানা এলাকার জগত্পুরে বিজেপির দলীয় কার্যালয়েও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধেই। কিন্তু এই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা বিশ্বজিত দাস বলেন, “এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। গোটা ঘটনাটাই বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। ওরা নিজেরাই নিজেদের পার্টি অফিস ভেঙেছে। আমাদের দলের লোকেদের উপরেও হামলা চালিয়েছে। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ করব।”