দলের জেলা পরিষদ সদস্যা কাকলি বরদোলুই খুনের ঘটনায় গোড়া থেকেই সিপিএমের দিকে আঙুল তুলেছিল তৃণমূল। কেশপুরের এই ঘটনায় এ বার ২৬ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর নামে খুনের মামলা রুজু হল। উল্লেখযোগ্য ভাবে অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা গড়বেতার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষেরও।
মঙ্গলবার রাতে বাড়িতেই খুন হন কেশপুরের জগন্নাথপুর অঞ্চলের লোয়াদা গ্রামের বাসিন্দা কাকলিদেবী। জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা কাকলিদেবীর স্বামী বিশ্বজিৎবাবু আবার তৃণমূলের জগন্নাথপুর অঞ্চল সভাপতি। তাঁর সামনেই গুলি করে খুন করা হয় বছর আঠাশের কাকলিদেবীকে। বুধবার রাতে বিশ্বজিৎবাবুর দাদা হরেন বরদোলুই সুশান্তবাবু-সহ ২৬ জনের নামে আনন্দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর আগে দাসেরবাঁধ কঙ্কাল মামলায় সুশান্তবাবুর নাম জড়িয়েছিল। সিআইডি-র হাতে গ্রেফতারও হন তিনি। পরে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জামিনে মুক্ত হন। তবে আদালতের নির্দেশে কঙ্কাল-মামলার শুনানির দিন ছাড়া এখনও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ঢুকতে পারেন না সুশান্তবাবু। কাকলিদেবী খুনে অভিযুক্ত বাকি ২৫ জনের মধ্যেও অনেকে দীর্ঘ দিন এলাকাছাড়া। এঁদের মধ্যে আছেন সিপিএমের কেশপুর জোনাল সদস্য এন্তাজ আলি, নিয়ামৎ হোসেন প্রমুখ।
এই পরিস্থিতিতে দলের ২৬ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের দাবি, “এটা মিথ্যা মামলা। পুরো অভিযোগটাই সাজানো।” বৃহস্পতিবার কলকাতাতেই ছিলেন সুশান্তবাবু। খুনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁর প্রতিক্রিয়া: “মানুষ সব দেখছেন। এ ব্যাপারে দলই যা বলার বলবে। আমি আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়ে পরে আমার বক্তব্য জানাব।” তবে সুশান্ত ঘনিষ্ঠ এক সিপিএম নেতার কথায়, “যে মানুষটি গত সাড়ে তিন বছরে শুধুমাত্র লোকসভা ভোটের দিন দু’ঘণ্টার জন্য গড়বেতায় ভোট দিতে গিয়ে এবং থানায় রিপোর্ট করে ফিরে এসেছেন, তাঁর নামে এমন অভিযোগ প্রতিহিংসা ছাড়া কিছু নয়। এ থেকে বোঝা যায় সুশান্তবাবুদের ফাঁসানোর জন্য শাসকদল কতটা মরিয়া।” যদিও তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের অভিযোগ, “সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই কাকলিকে খুন করেছে।” এ প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বক্তব্য, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত চলছে।”