রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনে তাঁদের আস্থা নেই। কেশপুরে তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যা কাকলি বরদোলুই খুনের ঘটনায় তাই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলল সিপিএম। এই ঘটনায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ-সহ ২৬ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হওয়ায় সরব হয়েছে দল।
শুক্রবার মেদিনীপুরে এক সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “আমরা চাই না রাজ্য প্রশাসনের কোনও স্তর থেকে এই ঘটনার তদন্ত হোক। কারণ, রাজ্য প্রশাসনের সব স্তরই শাসক দলের আজ্ঞাবহ হয়ে গিয়েছে। সিবিআই বা কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থা তদন্ত করুক। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলুক। তা হলেই সব স্পষ্ট হবে।”
তৃণমূল অবশ্য সিবিআই বা কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “দীপকবাবুদের আমলে এর চেয়েও অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটেছে। কখনও কোনও তদন্ত হয়নি! রাজ্য পুলিশের উপর প্রতিটি মানুষের আস্থা আছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরও আস্থা রাখা উচিত।”
গত মঙ্গলবার রাতে শ্বশুরবাড়িতে খুন হন কেশপুরের জগন্নাথপুর অঞ্চলের লোয়াদা গ্রামের বাসিন্দা কাকলিদেবী। কাকলিদেবীর স্বামী বিশ্বজিৎ বরদোলুই তৃণমূলের জগন্নাথপুর অঞ্চল সভাপতি। তাঁর সামনেই গুলি করে মারা হয় বছর আঠাশের কাকলিদেবীকে। ঘটনার পরেই জ্ঞান হারান বিশ্বজিৎবাবু। আপাতত এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। বুধবার রাতে তাঁর বড়দা হরেন বরদোলুই আনন্দপুর থানায় সুশান্তবাবু-সহ সিপিএম-এর ২৬ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন, ‘গোটা ঘটনা আমরা জানলা দিয়ে দেখি। শুনি দুষ্কৃতীরা বলছে, সুশান্ত ঘোষের নির্দেশেই তোদের শায়েস্তা করতে এসেছি।’
কাকলিদেবীর ভাসুর হরেনবাবু রাতের অন্ধকারে কী ভাবে এত জনকে চিনতে পারলেন, এ দিন সেই প্রশ্নও তুলেছেন দীপকবাবু। তাঁর যুক্তি, “মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণপক্ষ ছিল। তা সত্ত্বেও উনি (হরেনবাবু) জানলা দিয়ে কী ভাবে সব দেখতে পেলেন?” দীপকবাবু আরও জানান, যে ২৬ জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁরা ১০টি অঞ্চলের ২১টি গ্রামের বাসিন্দা। এই সিপিএম নেতার কথায়, “অভিযোগকারী রাত দেড়টার সময় এত জনকে চিনতে পারলেন কী করে, সেটাই রহস্য।”