গত মাসে কুলতলিতে পর্যটকদের লঞ্চে লুঠপাট-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বাসন্তীর ভাঙনখালির বাসিন্দা কুতুবুদ্দিন লস্কর নামে বছর তিরিশের ওই দুষ্কৃতী বৃহস্পতিবার সাহারানপুরে ধরা পড়ে। সেখানকার আদালত থেকে ‘ট্রানজিট রিমান্ড’-এ শুক্রবার রাতে কুতুবুদ্দিনকে আনা হয় কলকাতায়। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ কুতুবুদ্দিন ও তার দলবলের লুঠপাট করা বেশ কিছু জিনিসপত্র, নগদ টাকা এবং তাদের ব্যবহার করা আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।
শনিবার আলিপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “জেলায় ন’টি ডাকাতি-ছিনতাই এবং কলকাতাতেও কয়েকটি অপরাধে কুতুবুদ্দিন জড়িত। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ওকে এক বার ধরা হয়। মাস আটেক হাজতবাসের পরে, বেরিয়ে এসে আবার নতুন দল গড়ে অপরাধ করছিল ও। কুলতলিতে পর্যটকদের লঞ্চে ডাকাতির পরেই ও গা ঢাকা দেয়।”
পুলিশের দাবি, কুতুবুদ্দিন ও তার দলবলের থেকে দু’টি সেভেন এমএম পিস্তল, তিনটি পাইপগান, ১২ রাউন্ড কার্তুজ ছাড়াও লুঠ করা ২১টি মোবাইল, তিনটি ক্যামেরা, সাতটি ঘড়ি, ১২ ভরি সোনার গয়না এবং নগদ ২৮,৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। দু’টি মোটরবাইক এবং দু’টি ভুটভুটি আটক করা হয়েছে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে বাসন্তীর গৌরদাসপাড়ায় এক ইমারতি সরঞ্জামের দোকানে হানা দিয়ে মালিক অসিত মান্না-সহ পাঁচ জনকে গুলি করে লক্ষাধিক টাকা লুঠপাট করে পালায় দুষ্কৃতীরা। অসিতবাবু মারা যান। তদন্তে নেমে সেই সময়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে কুতুবুদ্দিনের নাম জানতে পারে পুলিশ। এর পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে কুলতলির মাতলা নদীতে নদিয়া থেকে সুন্দরবন বেড়াতে আসা এক দল পর্যটকের লঞ্চে ডাকাতি হয়। পর্যটকদের মারধর করে লক্ষাধিক টাকা, মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, গয়না-সহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ক্ষেত্রেও কুতুবুদ্দিনের নাম পায় পুলিশ। তার পর থেকেই তার খোঁজ শুরু হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের একটি দল দিন কয়েক আগে সাহারানপুর যায়। সেখানকার পুলিশের সাহায্য নিয়ে ধরা হয় কুতুবুদ্দিনকে।