আমানতের টাকা ফেরত না পেয়ে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন জনা পঞ্চাশেক পুরুষ ও মহিলা। আচমকাই তাঁদের দিকে তেড়ে গেল মারমুখী একদল লোক। বিক্ষোভ বন্ধ করতে কিল, চড় লাথি, ঘুষি চলতে লাগলো বৃষ্টির মতো। রেহাই পেলেন না মহিলারাও।
বুধবার বিকালের ঘটনা। ঘটনাস্থল হাওড়ার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। ব্যাঁটরা থানার একটি মামলায় এ দিন হাজির করানো হয়েছিল অর্থলগ্নি সংস্থা ‘এমপিএস’-এর কর্ণধার প্রমথনাথ মান্নাকে। বিচারকের কাছে তাঁকে হাজির করানোর আগে থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ওই সংস্থার আমানতকারী ও এজেন্টরা। এর পরেই তাঁদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে দুষ্কৃতীরা। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আদালত চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়। এর মধ্যে হামলাকারীরাই বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের বক্তব্য, প্রমথবাবুকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে পুলিশ এসে তাদের হটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারক প্রমথবাবুকে ১২ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়ার পর কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় আদালত থেকে তাঁকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, আমানতের টাকা ফেরত না পেয়ে প্রমথবাবুর বিরুদ্ধে দু’জন আমানতকারী মামলা দায়ের করেন ব্যাঁটরা থানায়। তদন্তকারী অফিসার অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আবেদন জানান আদালতে। এ দিন অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ ছিল। সেইমতো বাঁকুড়ার জেল থেকে প্রমথবাবুকে হাজির করানো হয় হাওড়া আদালতে। প্রমথবাবুকে হাজির করানো হবে শুনে ওই সংস্থার আমানতকারী ও এজেন্টদের একাংশ আদালত চত্বরে জড়ো হন। টাকা ফেরতের দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেক মহিলাও ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে লগ্নিকারীরা তাঁদের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। অথচ সংস্থার বিভিন্ন কার্যালয় খোলা রেখে কিছু ব্যক্তি এখনও টাকা তুলে চলেছেন।
পুলিশ জানায়, তাঁরা যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তখন আদালতের পূর্ব দিকের গেট দিয়ে এক দল হামলাকারী মারমুখী হয়ে বিক্ষোভকারীদের দিকে তেড়ে যায়। এর পর নিজেদের এমপিএসের এজেন্ট বলে দাবি করে তারা আমানতকারীদের পেটাতে শুরু করে। আমানতকারী ও এজেন্টদের অভিযোগ, যারা তাদের উপর এ দিন হামলা করেছে, তারা ওই সংস্থার ভাড়া করা গুন্ডা। বিক্ষোভ বানচাল করতে তাদের পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। হামলাকারীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।