—ফাইল চিত্র।
প্রথমে সিডনির চকোলেট কাফে এবং পরে পেশোয়ারের সেনা স্কুলে জঙ্গি হানা। এই পরিপ্রেক্ষিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বড়দিন এবং বর্ষবরণের অনুষ্ঠান যাতে নির্বিঘ্নে হয়, তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে বৃহস্পতিবার পুলিশের শীর্ষকর্তারা বৈঠক করেন শহরের বড় বড় হোটেল, ক্লাব, রেস্তোরাঁ এবং বারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যে সব জায়গায় বড়দিনের আগের দিন ও বর্ষবরণের দিন অনুষ্ঠান করা হয়, সেই সব হোটেল-রেস্তোঁরা-ক্লাবে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা।
লালবাজার সূত্রের খবর, এ দিন প্রায় ২০০ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে দু’দফায় বৈঠক করা হয়েছে। কোথায় কত ক্ষণ অনুষ্ঠান হবে এবং কত লোক হতে পারে, তার আনুমানিক হিসেব করে লালবাজারে আগাম জানিয়ে দিতে বলা হয় প্রতিনিধিদের। যাতে পার্কিং বা ট্রাফিক সংক্রান্ত পরিকল্পনা পুলিশ আগে থেকেই করতে পারে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি হোটেল-ক্লাব-বার-রেস্তোরাঁ সিসিটিভি-র নজরদারির আওতায় থাকতে হবে। শুধু তা-ই নয়, বৈঠকে উপস্থিত কর্তৃপক্ষের কাছে পুলিশের আবেদন, আলাদা করে একটি নিরাপত্তা-বাহিনী তৈরি করতে হবে। যাতে কোনও ঘটনা ঘটলে ওই বাহিনী প্রাথমিক ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারে।
বৈঠকে উপস্থিত কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, এ বার যেন মহিলাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আলাদা করে মহিলা সিকিওরিটি অফিসার নিয়োগ করা হয়। এক পুলিশকর্তা এ দিন বৈঠকের শেষে বলেন, “আমরা পরিষ্কার ভাবে ওই বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছি, হোটেল-রেস্তোরাঁয় আসা সকলের পরিচয় জেনে, সম্পূর্ণ তল্লাশি চালিয়ে তবেই ভিতরে ঢোকাতে হবে।” ওই অফিসারের কথায়, “প্রতিটি গেটে মেটাল ডিটেক্টর রাখা বাধ্যতামূলক করতে বলা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, খোলা জায়গায় রাত ১০টার পরে গান বাজানো যাবে না। পাঁচ তারা ও তার বেশি মর্যাদার হোটেল-রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান করা যাবে রাত ১২টা পর্যন্ত। বিশেষ অনুমতির সঙ্গে সেই সময় বেড়ে হতে পারে ভোর ৪টে। তবে পাঁচ তারার কম মর্যাদার ক্লাব-হোটেল-বারকে অনুষ্ঠান মিটিয়ে ফেলতে হবে রাত ২টোর মধ্যেই। অনুষ্ঠানের মূল কেন্দ্রস্থল পার্ক স্ট্রিটেও বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে পার্ক স্ট্রিট।
পাশাপাশি, পার্ক স্ট্রিটে কোনও রকম দুর্ঘটনা এড়াতে ৫০টি সিসিটিভি বসানোর কাজ চলছে। নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে অস্থায়ী ওয়াচ-টাওয়ার থেকেও ওই এলাকায় নজরদারি চালানো হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। শপিং মল, হোটেলের মতো জনবহুল এলাকায় পুলিশের অ্যান্টি সাবোতাজ টিমের সদস্যরা নজরদারি চালাবেন বলে লালবাজার সূত্রের খবর।