মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধনের পর বাগুইআটি উড়ালপুল। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতা সত্ত্বেও রাজ্য উন্নয়নের স্বার্থে কাজ আটকে রাখছে না। লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়েই সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য টাকা খরচ করে চলেছে। রবিবার বাগুইআটি উড়ালপুলের উদ্বোধন করতে এসে কথাগুলি বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজারহাট, নিউ টাউন, বাগুইআটি, এয়ারপোর্ট এলাকায় এলে বোঝা যায় গত সাড়ে তিন বছরে এই এলাকাগুলির সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। বাগুইআটি উড়ালপুল সেই উন্নয়নের নতুন একটি সংযোজন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সৌগত রায় আবার এই উড়ালপুল তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্যের বাড়তি টাকা খরচের খতিয়ানও তুলে ধরেন। তিনি জানান, উড়ালপুল তৈরির সময় প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল ২০৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জেএনএনইউআরএম দিয়েছে ৭০ কোটি আর বাকি ১৩৬ কোটি রাজ্য সরকার দিয়েছিল। কিন্তু ওই প্রকল্পে পরে খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১৩ কোটি টাকা। এই বাড়তি টাকা আর কেন্দ্র না দেওয়ায় রাজ্যকেই দিতে হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, এই উড়ালপুলের ফলে এলাকার যানজটের সমস্যা মিটে যাবে। এ দিকে উদ্বোধনের পরেই দেখা গেল, বেশ কিছু জিনিস মাথায় না রেখেই উড়ালপুলটি তৈরি করা হয়েছে। উড়ালপুল থেকে চার লেনের গাড়ি কেষ্টপুরের দিকে নামার পরে একটি সরু রাস্তায় মিশছে। এতে দমদম পার্ক এলাকায় যানজট হচ্ছে। অন্য দিকে আবার উড়ালপুল থেকে জোড়ামন্দিরের দিকে নামার মুখে রয়েছে ‘কাট-আউট’। সেখান দিয়ে সাধারণ মানুষ পার হচ্ছেন। ফলে গতিতে নেমে আসা গাড়িগুলিকে হঠাৎই গতি থামিয়ে দিতে হচ্ছে রাস্তা পারাপারকারীদের নিরাপত্তার জন্য। উড়ালপুলের উপর দিয়ে কত টনের গাড়ি যাতায়াত করতে পারে তার কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। উড়ালপুলের উপর গাড়ির গতিবেগ ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার আবার কোথাও লেখা রয়েছে ৩০ কিলোমিটার। কিন্তু কোন গাড়ির জন্য কত গতি থাকবে, তা নির্দিষ্ট করা নেই। আর সর্বোপরি উড়ালপুলে ‘স্পিড ব্রেকার’ তা নেই।
এত কিছু ত্রুটি নিয়েও উড়ালপুল চালু হওয়ায় অনেক সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন বলেই মনে করছেন অনেকে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ দিনের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণেন্দ বসু, ছিলেন সুজিত বসু, সৌগত রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, নির্মল ঘোষের মতো তৃণমূল নেতারা।