কয়লা খনি বন্টন নিয়ে ফের অস্বস্তিতে কংগ্রেস। টু-জি থেকে কয়লা ইউপিএ জমানায় হওয়া বেশ কয়েকটি কেলেঙ্কারির কথা তাদের আমলের শেষের দিকে প্রকাশ্যে আসে। মন্ত্রী থেকে আমলা অনেকের নামই জড়িয়ে পড়ে সেই সব কেলেঙ্কারিতে। কয়েক জন তো জেলের ঘানি টেনে এসে শেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আদালতে সেই সব মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। এরই মধ্যে মঙ্গলবার নাম না করে মনমোহন সিংহকে কয়লা-কেলেঙ্কারিতে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছে আদালত।
মঙ্গলবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে কয়লা খনি বন্টনে দুর্নীতি বিষয়ক মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি ভরত পরাশর এই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে প্রশ্ন করেন, “আপনার কি মনে হয় না, এই বিষয়ে কয়লামন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন ছিল? পুরো চিত্র তুলে ধরতে তার বক্তব্য যে প্রয়োজন ছিল সেটা মনে হয়নি এক বারও?” ঘটনাচক্রে সেই সময়ে কয়লামন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে তদন্তকারী ওই সিবিআই অফিসার জানান, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অফিসারদের এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে দফতরের মন্ত্রীকে আর জিজ্ঞাসাবাদ করাটা জরুরি বলে মনে হয়নি। এর পরেই সিবিআইয়ের ওই অফিসার জানান, যদিও প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজনীয় অনুমতিও মেলেনি তখন।
২০০৫-এ ওড়িশার তালাবিরাতে বিড়লার সংস্থা হিন্দালকো-কে কয়লা খনি বন্টন করে ইউপিএ সরকার। ২০১৩-র অক্টোবরে কয়লা খনি বন্টনের ওই ঘটনায় প্রাক্তন কয়লাসচিব পি সি পারেখ এবং শিল্পপতি কুমার মঙ্গলম বিড়লার নামে এফআইআর করে সিবিআই। অভিযোগ, স্ক্রিনিং কমিটির সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে কুমারমঙ্গলমের কোম্পানি হিন্দালকো-কে খনি বন্টনের বরাত দিয়েছিলেন পারেখ। কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাই তাঁকে ওই বরাত পাইয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ করে বিরোধীরা। এর পরেই পারেখ অভিযোগ করেন, কয়লা মন্ত্রক তখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকায় এই ঘটনায় সমান ভাবে দায়ী মনমোহন। কংগ্রেস তখন মনমোহনের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বিড়লার নামে এফআইআর করায় সেই সময় সমালোচনার মুখে পড়ে সিবিআই। পারেখকে এমন কথাও বলতে শোনা যায়, হয় সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে, না হলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সাহস ওদের নেই।
এ দিন বিচারপতি পরাশর সিবিআইকে ওই মামলার কেস ডায়ারি এবং ক্রাইম ফাইল আদালতে মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৭ নভেম্বর।