তাঁর আত্মজীবনী ‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’তে বিস্ফোরক ও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশের পরের দিন মঙ্গলবার সচিনকে আক্রমণ করলেন গ্রেগ চ্যাপেল। শুধু তাই নয়, আত্মজীবনীতে সচিন তাঁর সম্পর্কে যা লিখেছেন সেই তথ্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেও দাবি করেন তিনি। এ দিন অস্ট্রেলিয়ার একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটে সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় জানান, রাহুল দ্রাবিড়ের হাত থেকে অধিনায়কত্ব ‘কেড়ে’ নিয়ে সচিনকে সেই দায়িত্ব দেওয়ার কথা কখনওই চিন্তা করেননি। তিনি বলেন, “খুবই অবাক হচ্ছি আমার সম্পর্কে এ ধরনের তথ্য প্রকাশিত হওয়ায়।”
সচিন তাঁর আত্মজীবনীর একটি অংশে জানিয়েছেন, ২০০৭-এর বিশ্বকাপের ঠিক আগেই গোপনে তাঁর বাড়িতে অধিনায়কত্বের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন গুরু গ্রেগ। ভারতীয় ক্রিকেটকে ‘দখল’ করতে তাঁকে সেই ষড়যন্ত্রে সামিল করতেও চেয়েছিলেন বলে তাঁর লেখা বইতে দাবি করেছেন সচিন।
কিন্তু এ দিন সচিনের সেই দাবি নস্যাত্ করে গ্রেগের পাল্টা দাবি, সচিনকে কী ভাবে চোটমুক্ত করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করতে ফিজিও এবং সহকারী কোচকে সঙ্গে নিয়ে একবারই তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। অধিনায়কত্বের প্রসঙ্গ তো সে দিন ওঠেই নি, বরং সেই বিকেলটা আনন্দে কেটেছিল।
সোমবার সচিনের আত্মজীবনীর বেশ কিছু অংশ প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ক্রিকেট দুনিয়ায় শোরগোল পড়ে যায়। সেখানে গ্রেগ চ্যাপেলকে ‘রিং মাস্টার’ বলে তুলোধোনা করেছেন তিনি। দল থেকে সিনিয়র ক্রিকেটারদের ছেঁটে ফেলা, সতীর্থদের একে অপরের মধ্যে ‘অবিশ্বাস’-এর আবহ তৈরি করা এবং কী ভাবে তাঁকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন গুরু গ্রেগ— এ সবই সচিন তুলে ধরেছেন তাঁর আত্মজীবনীতে।
সচিনকে চ্যাপেলের আক্রমণের দিনই মুখ খুললেল জাহির খান। সচিনের বক্তব্যকে সমর্থন করে তিনি গুরু গ্রেগ-এর সময়কে ‘ভারতীয় ক্রিকেটের অন্ধকার পর্ব’ বলে আখ্যা দেন। গ্রেগ যে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন এ দিন সে কথা জানিয়েছেন জাহির। আরও এক ধাপ এগিয়ে হরভজন সিংহ বলেন, “সেই সময় দলেরই কিছু ক্রিকেটার চ্যাপেলকে ভুল তথ্য যোগান দিত। ভারতীয় ক্রিকেটকে যে ভাবে তিনি শেষ করে দিয়েছিলেন তা পুনরুদ্ধার করতে তিন বছর সময় লেগেছিল।” দলের ‘কিছু ক্রিকেটার’কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে হরভজন ক্রিকেটীয় বিতর্ক আরও ‘উস্কে’ দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ দিন তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে বিসিসিআই-চ্যাপেল ই-মেল বিতর্ক থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও।