কাশ্মীরে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে হত ১ যুবক, আহত ২,

বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসরত আলমকে গ্রেফতার করেও শেষ রক্ষা করতে পারল না মুফতি সরকার। আরও এক বার বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কাশ্মীর। বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। তার নাম সুহেল আহমেদ সফি। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে কাশ্মীরের বাদগাম জেলার নরবলে। ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই যুবক। তাঁরা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। নরবলের দিকে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হয়েছে জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিক এবং আর্য সমাজের নেতা স্বামী অগ্নিবেশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ১৩:২৭
Share:

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল পুলিশের।

বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসরত আলমকে গ্রেফতার করেও শেষ রক্ষা করতে পারল না মুফতি সরকার। আরও এক বার বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কাশ্মীর। বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। তার নাম সুহেল আহমেদ সফি। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে কাশ্মীরের বাদগাম জেলার নরবলে। ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই যুবক। তাঁরা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। নরবলের দিকে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হয়েছে জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিক এবং আর্য সমাজের নেতা স্বামী অগ্নিবেশ।

Advertisement

হুরিয়ত নেতা গিলানি শনিবার শ্রীনগর থেকে ত্রাল পর্যন্ত এক বিক্ষোভ মিছিল এবং হরতালের ডাক দিয়েছিলেন। বিক্ষোভ-প্রতিবাদের কারণ দু’টি। প্রথমত, মাসরত আলমের গ্রেফতারি এবং দ্বিতীয়ত পুলওয়ামা জেলার ত্রালে সেনাবাহিনীর গুলিতে দুই যুবকের মৃত্যু। কিন্তু, পুলিশ সেই মিছিলের অনুমতি দেয়নি। অনুমতিহীন সেই মিছিল এ দিন নরবলে পৌঁছতেই পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। মিছিল আটকাতেই পুলিশের দিকে পাথর ছুড়তে শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। এমনকী, জলকামানও ব্যবহার করে পুলিশ। অভিযোগ ওঠে, বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। গুলিতে আহত হন তিন যুবক। তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সুহেলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকেরা।

হুরিয়তের ডাকা হরতালের জেরে ভালই সাড়া মিলেছে কাশ্মীরে। বন্ধ ছিল অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজ, দোকান-বাজার, পেট্রল পাম্প। রাস্তায় নামেনি সরকারি বাস। বেসরকারি বাস, গাড়ি চললেও তাদের সংখ্যা ছিল কম।

Advertisement

কেন ফের উত্তপ্ত ভূস্বর্গ?

মুফতি মহম্মদ সৈয়দের পিডিপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়েছে বিজেপি। কিন্তু, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি প্রথম থেকেই নরম মনোভাব নেয় মুফতি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে নরম মনোভাব নিয়ে চলার কৌশল নেন মুফতি। সঙ্ঘ পরিবারের অভিযোগ, ক্ষমতায় এসে কাশ্মীরে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য পাকিস্তানকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই গত মার্চে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় হুরিয়ত নেতা মাসরত আলমকে। গত বুধবার সেই আলমকেই দেখা যায় হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির এক পথসভায় পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে ভারত-বিরোধী স্লোগান দিতে। এর পরই রাজ্য সরকারকে কড়া বার্তা দেয় কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তখনই রাজনাথ স্পষ্ট করে দেন, জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে কোনও রকম গাফিলতি সহ্য করা হবে না।

চুপ থাকেনি পাকিস্তানও। আলমের বিষয়টি নিয়ে ভারতকে তোপ দেগেছিলেন পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র তসনিম আসলম। কেন্দ্রের পরামর্শ মতো গিলানি এবং আলমকে গৃহবন্দি করে রাখে জম্মু সরকার। শুক্রবার রাতে আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য দিকে, চলতি সপ্তাহে ত্রালে সেনার গুলিতে মৃত্যু হয় দুই যুবকের। হুরিয়ত নেতা মিরওয়াজ উমর ফারুকের অভিযোগ, জঙ্গি তকমা দিয়ে বিনা অভিযোগে ওই দু’জনকে গুলি করে মেরেছে সেনাবাহিনী।

শনিবার সকাল থেকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে মিরওয়াজ উমর ফারুককে। আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement