চেন্নাইয়ে পৌঁছলেন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এআইএডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা।
অবশেষে জেল থেকে ছাড়া পেলেন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এআইএডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা। গত ২২ দিন ধরে তিনি বেঙ্গালুরুর পারাপান্না সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন। শনিবার ছাড়া পাওয়ার পরই তিনি বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে পৌঁছন। সেখান থেকে বিশেষ বিমানে এ দিন বিকেলে চেন্নাই পৌঁছন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টে শুক্রবারই শর্তসাপেক্ষে জয়ার জামিন মিলেছিল। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া শেষে বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত থেকে জয়ার জেলমুক্ত হওয়ার নির্দেশ হাতে পেতে সকাল গড়িয়ে যায়। এ দিন বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালতে দু’কোটি টাকার বন্ড-সহ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জমা দেন জয়ললিতার আইনজীবী। তার পরই বিচারপতি জন মাইকেল ডিকুনা জেল থেকে জয়ললিতার ছাড়া পাওয়ার নির্দেশ দেন। তত ক্ষণে বেঙ্গালুরুর পারাপান্না সেন্ট্রাল জেলের সামনে পৌঁছে গিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ও পনিরসেলভম, রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রী-সহ এআইএডিএমকে-র বেশ কয়েক জন সাংসদ এবং বিধায়ক।
জেল থেকে বিমানবন্দরের পথে জয়ললিতা।
সুপ্রিম কোর্টে জয়ার জামিন মেলার খবর আসতেই তামিলনাড়ু জুড়ে আনন্দের ঢল নামে। কিন্তু নেত্রীর জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সেই আনন্দে যেন জোয়ার লাগে। উত্তেজনার বশে শান্তিশৃঙ্খলা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়ে আগেই জেল থেকে বিবৃতি দিয়ে সমর্থকদের সাবধান করে দিয়েছিলেন তাঁদের আম্মা। তা সত্ত্বেও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক রাখতে চায়নি রাজ্য প্রশাসন। এ দিন সকাল থেকেই জেলের এক কিলোমিটারের মধ্যে কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার এম এন রেড্ডি বলেন, “এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইনি।”
এআইএডিএমকে সমর্থকদের উল্লাস।
আয়বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর জয়ললিতাকে দোষী সাব্যস্ত করে বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত। নেত্রীর সঙ্গেই অভিযুক্ত হন তাঁর ঘনিষ্ঠ তথা প্রাক্তন অভিনেত্রী শশীকলা, তাঁর পালিত পুত্র এন সুধাকরণ এবং ইলাভারসিও নামে এক আত্মীয়। সুধাকরণের সঙ্গে যদিও পরের দিকে সম্পর্ক ছিন্ন করেন জয়া। ওই নির্দেশে দোষীদের প্রত্যেকের চার বছরের কারাদণ্ড এবং ১০০ কোটি টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেয় আদালত। এর পরই জয়ার জেলযাত্রা।
ওই দিন সুপ্রিম কোর্ট কয়েকটি শর্তের প্রেক্ষিতে জয়ার জামিন মঞ্জুর করে। এক, দু’মাসের মধ্যে কর্নাটক হাইকোর্টে আপিলের সব নথি জমা দিতে হবে জয়ললিতাকে। দুই, শুনানি স্থগিত রাখার কোনও রকম চেষ্টা করা যাবে না। এ ছাড়াও সমর্থকেরা যাতে কোনও রকম গোলমাল না পাকায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে নেত্রীকে। এই মামলায় অন্য তিন অভিযুক্তেরও ওই দিন জামিন মেলে শীর্ষ আদালতে। এ দিন জয়া-সহ অন্যরাও জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
ছবি: পিটিআই।