ট্যাক্সিচালকদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে কড়া অবস্থান নিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ২০-টিরও বেশি ট্যাক্সি আটক করে কড়া হওয়ার বার্তা দিল সরকার। তাতে অবশ্য ধর্মঘট থেকে পিছু হটছেন না ট্যাক্সিচালকেরা। বৃহস্পতিবার লাগাতার ধর্মঘটের প্রথম দিন একশো শতাংশ সাফল্য মিলেছে বলে দাবি করে পাল্টা ট্যাক্সিচালকদের পক্ষ থেকেও জানিয়ে দেওয়া হল, সরকার আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করতে চাইছে না। ফলে, ধর্মঘট চলবে। একই সঙ্গে, বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলি শুক্রবার থেকে রাজ্য জুড়ে সার্বিক পরিবহণ ধর্মঘটের ডাকেও অনড় রইল। ফলে, শুক্রবার শুধু ট্যাক্সি নয়, বাস-মিনিবাস-অটো-সহ পরিবহণের সব মাধ্যম রাস্তায় না-থাকার আশঙ্কা এবং রাজ্যবাসীর হয়রানির সম্ভাবনা রয়েই গেল।
পুজোর ঠিক আগে সার্বিক পরিবহণ ধর্মঘটের ফলে সাধারণ মানুষের যে হয়রানি হবে, তার দায় রাজ্য সরকারের উপরেই চাপিয়েছে সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, বিএমএস-সহ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলি। সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর বক্তব্য, “সরকার দমনমূলক আচরণ করছে। ট্যাক্সিচালকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করতে চাইছে না।” সরকারের এই মনোভাবের কারণে বাধ্য হয়েই পরিবহণ ধর্মঘটে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতারা।
এ দিন রাজ্যপালের কাছে গিয়ে একই দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও। ট্যাক্সিচালকদের দাবিদাওয়া নিয়ে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেন সূর্যবাবু। তাঁর মতে, “সরকারের অনমনীয় মনোভাবের কারণে পুজোর মুখে ট্যাক্সিচালক এবং যাত্রী দু’পক্ষই হয়রানির মুখোমুখি হচ্ছে। রাজ্যপালকে বলেছি, সরকারকে বলুন যাতে আলোচনায় বসে বিষয়টি শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান করুক।”
যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এ দিন ফের আলোচনায় বসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, “আলোচনার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। ধর্মঘটীদের প্রতি সরকার কঠোর মনোভাবই নিতে চাইছে। সেই বার্তা দিতেই এ দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ২০-টিরও বেশি ট্যাক্সিকে পুলিশ এবং পরিবহণ দফতর যৌথ অভিযান চালিয়ে আটক করেছে।”
একশো শতাংশ ধর্মঘট হবে কি না, তা জানা যাবে শুক্রবারই। কিন্তু বৃহস্পতিবার দিনভর রাস্তায় বেসরকারি বাসের দেখা প্রায় মিললই না। সকালে যাও-বা ছিল, বেলা যত বাড়ল, বাসের সংখ্যা ততই কমতে শুরু করল। যা দেখে উৎফুল্ল শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। অন্য দিকে, পরিবহণ কর্তাদের যুক্তি বিশ্বকর্মা পুজোর বিসর্জনের কারণেই রাস্তায় বাস কম। শুক্রবার চিত্রটা পাল্টে যাবে বলেই দাবি কর্তাদের।