লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিটে প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: এএফপি।
কাশ্মীর নিয়ে বেনজির-পুত্র বিলাবল ভুট্টোর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে যে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল তার আঁচ পড়ল লন্ডনেও। রবিবার পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র পক্ষ থেকে লন্ডনে ‘মিলিয়ন মার্চ’ নামে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভার মূল বিষয় ছিল ‘কাশ্মীর’। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আইনজীবী সুলতান মাহমুদ চৌধুরী এবং ব্রিটেনের সাংসদ লর্ড নাজির আহমেদের নেতৃত্বে ট্রাফালগার স্কোয়ার থেকে ডাউনিং স্ট্রিট পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটেন কয়েকশো মানুষ। এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। মিছিল শেষ হওয়ার পর বক্তৃতা দিতে ওঠেন বিলাবল। কাশ্মীর নিয়ে সুর চড়ানোমাত্রই দেখা দেয় বিপত্তি। হঠাত্ই জনতার মধ্যে থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে খালি প্লাস্টিকের বোতল, ক্যান এবং ইট। পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে স্লোগানও। ইংল্যান্ডের ইস্ট মিডল্যান্ডস-এর ডার্বি শহর থেকে আসা ওই বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, এই মিছিল কাশ্মীর এবং কাশ্মীরিদের কল্যাণের স্বার্থে। বিলাবলের এখানে কোনও ভূমিকা নেই। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় পুলিশের হস্তক্ষেপে বিলাবলকে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর মুলতানের একটি জনসভায় বিলাবল বলেছিলেন, “পুরো কাশ্মীরকে আমি ফিরিয়ে আনব। এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না। কারণ, অন্য সব প্রদেশের মতো কাশ্মীরও পাকিস্তানের অংশ।” তাঁর এই মন্তব্যের পরই বিতর্কের আবহ তৈরি হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করার পাশাপাশি কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার পর পাকিস্তানকে শান্তির বার্তা পাঠানো হয় বেশ কয়েক বার। কিন্তু সীমান্তে পাক রেঞ্জার্সের বিনা প্ররোচনায় বার বার সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনে সেই আবহ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর প্রথম কাশ্মীর সফরে গিয়ে পাকিস্তানকে এ বিষয়ে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন মোদী। এর পরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে ভারতের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার কথা তুলেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তান। এরই মধ্যে বিলাবলের ওই মন্তব্য মোটেও ভাল চোখে দেখেনি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও। ২০১৮-য় পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে বিলাবল তার সদ্ব্যবহার করতে চাইছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।