দিল্লির বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন গত ১৯ মে পালন করল ভাষা দিবস। অসমের শিলচরে বাংলা ভাষার জন্য ১৯৬১-র ১৯ মে এগারো জন বাঙালি প্রাণ দিয়েছিলেন। তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই ছিল এই ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান।
১৯৬০-এর ২৪ অক্টোবর অসমের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চালিহা বিধানসভায় একক রাজ্যভাষা বিল পাশ করেন। সিদ্ধান্ত হয়, অসমিয়া হবে রাজ্যের একমাত্র সরকারি ভাষা। কিন্তু বরাক উপত্যকার বেশির ভাগ বাঙালি মানতে পারেননি এই বৈষম্য। মাতৃভাষা বাংলাকে দ্বিতীয় রাজ্যভাষা করার দাবিতে শুরু হয় প্রবল আন্দোলন। অবশেষে আসে ১৯৬১-র ১৯ মে। আন্দোলনকারীরা ভোর ৪টে থেকে শিলচর রেলস্টেশনে জড়ো হতে থাকেন। শিলচর স্টেশনে অবরোধের সময় অসম রাইফেলস অবরোধকারীদের লক্ষ করে গুলি ছুড়লে ১১ জন ভাষা সৈনিক নিহত হন, আহত হন অর্ধশত।
এই অনুষ্ঠানে বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তপন সেনগুপ্ত জানান, ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী, প্রয়াত অনিল সরকারের উৎসাহে তিন বছর আগে দিল্লিতে এই শহিদ স্মৃতিচারণ শুরু হয়। দিল্লিতে বাঙালিদের নানা সমস্যার প্রসঙ্গও তপনবাবু তাঁর আলোচনায় উল্লেখ করেন। সংস্থার সভাপতি দেবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ভাষা শহিদদের আত্মদানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। অনুষ্ঠানে অঞ্জলি সেনগুপ্ত অসমের বাঙালিদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। দিল্লির হিমাদ্রী দত্ত, সৌরাংশু সিংহ ও কোচবিহারের শৌনক কবিতাপাঠ করেন। দিল্লির নাট্যকর্মী, আদপে শিলচরের মানুষ ভীষ্মব্রত ভট্টাচার্য ভাষা শহিদদের ত্যাগের কথা মনে করিয়ে দেন। কলকাতার বাচিকশিল্পী ঈশিতা দাশ অধিকারী আবৃত্তি করেন। এর পর দিল্লির ‘শিঞ্জন’ নৃত্যগোষ্ঠীর তিন-চার বছর বয়সী খুদেরা নৃত্য পরিবেশন করে। নৃত্য পরিচালনা করেন স্মিতা চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে তসলিমা নাসরিন, ইশিতা ভাদুড়ি-সহ বহু বিশিষ্ট মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন দিল্লির মাতৃভাষা মিশনের কর্মকর্তা অম্বিকা রায়ও। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন শৈলেন সাহা।