দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে সরকারি নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তেজনা ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে। বিক্ষোভ-অবরোধ ছাড়াও রাস্তা কাটা, কালভার্ট উপড়ে ফেলা থেকে শুরু করে পুলিশকে লক্ষ করে ইটবৃষ্টি— এ সবের ফলে রবিবার রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নাজেহাল হতে হল স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে।
পুজো এবং ঈদ পাশাপাশি পড়ায় (সোমবার ঈদ) শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল, শনিবার ও সোমবার রাত ৮টার পরে দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জন করা যাবে। ঈদের আগের দিন, রবিবার রাজ্যের কোথাও বিসর্জন দেওয়া যাবে না। শনিবার অবশ্য বিসর্জন দিতে রাজি ছিলেন না বসিরহাটের বেশ কিছু বড় পুজোর উদ্যোক্তারা। কিন্তু এই নির্দেশের ফলে রাজ্যের অন্য কোনও প্রান্তে তা নিয়ে অশান্তি হয়নি, রবিবার যা হল বসিরহাটে।
মহকুমা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছিলেন, সরকারি নির্দেশ মেনে শনিবার বিসর্জনের সময়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু রবিবার কেউ বিসর্জন দিতে চাইলে, সে সময়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে পারবে না পুলিশ। তা নিয়েই শুরু হয় জলঘোলা। শনিবার রাতের দিকে পুলিশের তরফে বিভিন্ন পুজো কমিটিকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়, রবিবার কোনও মতেই বিসর্জন দেওয়া যাবে না।
রবিবার সকালে দেখা যায়, বসিরহাটের বিভিন্ন বড় পুজো মণ্ডপের বাইরে লাঠি হাতে তিন-চার জন করে পুলিশকর্মী দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন। তাতে আগুনে ঘি পড়ে। পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ জনতা নেমে পড়ে রাস্তায়। ইটিন্ডা রোড, টাকি রোড, মার্টিন বার্ন রোডে শুরু হয় অবরোধ। কোথাও কোথাও প্যান্ডেল থেকে প্রতিমা নামিয়ে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। ক্ষুব্ধ জনতা ভ্যাবলা স্টেশনে রেল অবরোধ করে। ভ্যাবলাতেই পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। এর ফলে আহত পান কয়েক জন পুলিশকর্মী। র্যাফ নামিয়ে, লাঠি উঁচিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। একসময়ে পুলিশ কর্তাদের কাউকে কাউকে কার্যত হাতজোড় করে জনতাকে শান্ত হতে অনুরোধ করতেও দেখা যায়। বিকেলের দিকে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে বার্তা পৌঁছয়, রবিবার চাইলে বিসর্জনে বাধা দেওয়া হবে না। সে কথা জানতে পেরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত হয়।