সংগৃহীত চিত্র।
আরজিকর কাণ্ডের জেরে উদ্বেগ বাড়ছে শিক্ষক মহলেও। মহিলাদের নিরাপত্তার স্বার্থে স্কুল স্তর থেকেই আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক, এই মর্মে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিল শিক্ষক সংগঠনগুলি।
শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য, ছাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি তাদের এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার করার জন্য গোড়া থেকেই আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “আমরা মনে করি, স্কুল স্তর থেকেই মেয়েদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করা ও আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। তাই শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করলাম স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ক্যারাটে ও মার্শাল আর্ট শেখানো বাধ্যতামূলক করতে। সরকার সংবেদনশীল হলে নিশ্চয়ই এটা করবে।”
বেশ কিছু স্কুল বা কলেজে নিজ উদ্যোগে এই ধরনের আত্মরক্ষার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। যাতে রাস্তাঘাটে কোনও বিপদে পড়লে সহজেই তারা নিজেরা বিপদ থেকে মুক্তি পেতে পারে। তবে আরজিকর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে, স্কুল স্তর থেকেই তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। পার্ক ইনস্টিটিউশন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, “আমরা নিজেদের উদ্যোগে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তবে শিক্ষা দফতরের উচিত পাঠক্রমের মধ্যেই এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে যুক্ত করা। শারীরশিক্ষার শিক্ষকদের স্পেশাল ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা বা কোনও বিশেষ প্রশিক্ষিত কাউকে নিয়ে এসে সপ্তাহে দু’দিন করে স্কুলগুলিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেওয়া জরুরি। ছাত্রীরা এতে অনেক উপকৃত হবে।”
শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য, পুরসভার স্তরে স্কুলগুলিতে শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের যৌন শিক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সাধারণ স্কুল স্তরে সরকারকে করতে হবে। পাশাপাশি, অভিভাবক, পড়ুয়া ও সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সপ্তাহে এক দিন হলেও কাউন্সেলিং-এর প্রয়োজন রয়েছে।
নারায়ণ দাস বাঙুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ ছেলে-মেয়ে প্রত্যেকেরই নেওয়া উচিত। শুধু আত্মরক্ষা নয়, যৌনশিক্ষা ও কাউন্সেলিংয়ের বিষয়টিও অবিলম্বে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। সমাজের অবক্ষয় দূর করতে, স্কুলস্তর থেকেই সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করতে হবে শিক্ষা দফতরকে।”