নিট ইউজি ২০২৩ উত্তীর্ণ যমজ কন্যা সৈয়দ সাবিয়া এবং সৈয়দ বিসমাহ্। ছবি: টুইটার
জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগ্রাম ভারতীয় মানচিত্রের সেই অবস্থানে রয়েছে, যে অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে বিতর্কের শেষ নেই। এই প্রদেশটি থেকে প্রায় রোজ সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সম্মুখ সমরের সংবাদ মেলে। যেখানে জীবনের অনিশ্চয়তা প্রায়ই কুঁড়ে কুঁড়ে খায় স্থানীয় বাসিন্দাদের, সেই জায়গা থেকেই দুই বোন প্রথম বারের চেষ্টাতেই ২০২৩ এর ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট তথা নিট ইউজি পরীক্ষায় সফলতা অর্জন করেছেন। কৃতিদের নাম সৈয়দ সাবিয়া এবং সৈয়দ বিসমাহ্। এঁরা সম্পর্কে যমজ বোন, এবারের পরীক্ষায় তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬২৫ এবং ৫৭০।
সংবাদসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া সূত্রে খবর, দুই বোন কুলগ্রাম প্রদেশের নূরাবাদের ওয়াটু গ্রামের বাসিন্দা। বাবা সাজাদ হোসেন স্থানীয় জামিয়া মসজিদের ইমাম। কিন্তু মেয়েদের পড়াশোনা নিয়েও তিনি সমান ভাবে সতর্ক। সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। ওঁদের সাফল্যে ভীষণ খুশি। ধার্মিক শিক্ষার পাশাপাশি, পার্থিব শিক্ষাগ্রহন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমার মেয়েদের আমি ইসলাম, প্রার্থনা এবং কোরানের পাশাপাশি, স্কুলজীবনের শিক্ষাও দিয়েছি।’’
কৃতিরা কী বলছেন?
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, নিট ইউজি বিভাগে প্রথমবারের জন্য পরীক্ষা দেওয়ায় ফলাফল নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলেন সৈয়দ সাবিয়া এবং সৈয়দ বিসমাহ্। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘‘আমরা হয়তো অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে পারতাম, যদি এক জনও একা থাকতাম। এই সাফল্য আমরা একে অপরকে সমর্থন করেই অর্জন করেছি। ’’ সৈয়দ সাবিয়ার ইচ্ছে তিনি ভবিষ্যতে চিকিৎসক কিংবা আইএএস পদমর্যাদায় কাজ করবেন। তবে তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা দুজনেই যেন ভালো চিকিৎসক হতে পারি এবং নিজেদের মানুষদের সেবা করতে পারি। ’’
এই সফলতার খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় মানুষরা ভিড় জমাতে থাকেন কৃতিদের বাড়িতে। শুভেচ্ছা বার্তায় ক্রমশই উপচে পড়ছে তাঁদের ঘর। কিন্তু সাবিয়া, বিসমাহ্-রা চান, যেন তাঁদের মত করেই অন্যারাও নিজেদের দূর্বলতাকে চিনে ভয়কে জয় করতে শেখে। জয়ের হাসি ছড়িয়ে পড়ুক সীমান্তে।