নিউ আলিপুর কলেজ, কলকাতা। নিজস্ব চিত্র।
গত ১০০ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য একাধিক সমস্যার সম্মুখীন বিশ্বের সমস্ত মানুষ। এর মধ্যে জলসঙ্কট অন্যতম। আশঙ্কা, যে ভাবে ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমছে, ভবিষ্যতে এই নিয়ে বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই জল সংরক্ষণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে ছোট থেকেই শিশুদের সচেতন করা উচিত বলে মনে করছে কলকাতার নিউ আলিপুর কলেজের পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার এই নিয়ে কলেজেই বিতর্ক এবং আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল তারা।
২২ মার্চ ছিল ‘বিশ্ব জল দিবস’। রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারা জল সংরক্ষণের জন্য চিহ্নিত এই দিনকে উদযাপন করার পাশাপাশি এই নিয়ে নয়া ভাবনার কথা তুলে ধরল কলকাতার এই কলেজ। জল সংরক্ষণ নিয়ে শুধু মৌখিক সচেতনতা নয়, স্কুল থেকে কলেজ পর্যন্ত জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাকে কী ভাবে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা নিয়েই বিতর্কসভার আয়োজন করেছিলেন কলেজ পড়ুয়ারা।
মঙ্গলবার কলেজের তর্কোলজিক্যাল (ডিবেট অ্যান্ড ক্যুইজ়) ক্লাব, ইকুয়াল অপারচুনিটি সেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ্যা এবং রসায়ন বিভাগ একযোগে ‘চিলিং রিয়্যালিটি: দ্য ফ্র্যাজাইল ফিউচার অফ হিউম্যান বিয়িংস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। আলোচনাসভায় মুখ্য অতিথি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পৃথা ভট্টাচার্য, হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ ফর উইমেনের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়াও বক্তৃতা করেন নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যাপক বুলু মুখোপাধ্যায় এবং অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি বন্দোপাধ্যায়। এর পর ছিল পড়ুয়াদের জন্য একটি বিতর্কসভা। বিষয় ছিল— স্কুল-কলেজের পাঠ্যক্রমে জল সংরক্ষণ বিষয়টি রাখা উচিত কি না? যাতে অংশগ্রহণ করেন কলেজের একশোজন পড়ুয়া।
এই প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী বলেছেন, “আগামী পৃথিবীতে জল নিয়ে হয়তো বিশ্বযুদ্ধও ঘটে যেতে পারে। সেই জন্য আমাদের কর্তব্য, জলের উপকারিতা, জলের সঠিক ব্যবহার, জল সংরক্ষণ এবং জলকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা— এই সমস্ত বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্কুল স্তর থেকেই সচেতন করা।” তিনি আরও জানান, এ ক্ষেত্রে বৃষ্টির জলকে ধরে রেখে কী ভাবে পুনর্বার ব্যবহার করা যায় বা নোংরা জলকে পরিশ্রুত করে ব্যবহার করা সম্ভব, তা যদি ছোট থেকেই ওরা জানতে পারে, তা হলে ভবিষ্যৎ সমাজকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে।
একই মত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পৃথা ভট্টাচার্যের। কী ভাবে পরিবেশের অবক্ষয়ের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, জীববৈচিত্র্য, মানুষের স্বাস্থ্য-সহ একাধিক সমস্যা জড়িত, সে কথাই উঠে এসেছে তাঁর বক্তৃতায়।
কলেজ পড়ুয়াদের বিতর্কসভাতেও পরিবেশ রক্ষার জন্য নানা উপায়, নীতিনির্ধারণ, সচেতনতা বৃদ্ধি-র মতো নানা বিষয় উঠে এসেছে।