চিকিৎসকদের মুচলেকা বাতিলের নয়া নির্দেশিকার প্রস্তুতি সংগৃহীত ছবি
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক চিকিৎসকদের মুচলেকা স্বাক্ষরের নীতি বাতিলের চূড়ান্ত নির্দেশিকাটি প্রস্তুত করছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)-এর সুপারিশ মেনেই চিকিৎসকদের এই মুচলেকা স্বাক্ষরের নীতিটি কার্যকর করা হয়েছিল। এই মুচলেকাপত্র অনুযায়ী, চিকিৎসকদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পর রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে একটি নির্ধারিত সময় কাজ করতে হয়। তা না হলে রাজ্য বা মেডিক্যাল কলেজগুলিকে তাঁদের জরিমানা দিতে হয়।
২০১৯-এর অগাস্টে শীর্ষ আদালত রাজ্যের এই সংক্রান্ত নীতি বহাল এবং কিছু রাজ্যকে কঠোর শর্ত আরোপের কথা বলে। তখন শীর্ষ আদালত আরও জানায় যে, সরকারি হাসপাতালে শিক্ষাপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের এই বাধ্যতামূলক পরিষেবার জন্য কেন্দ্র ও মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া-কে একটি অভিন্ন নীতি প্রণয়ন করতে হবে, যা সমস্ত রাজ্যের জন্য প্রযোজ্য হবে।
এর পর শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রক স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রধান অধিকর্তা বি ডি আঠানীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে। কমিটির রিপোর্ট ২০২০-এর মে মাসে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের কাছে পাঠানো হয়। এর পর এনএমসি রিপোর্ট নিয়ে তাঁদের বক্তব্য পেশ করে ২০২১-এর ফেব্রুযারিতে।
এর পর স্বাস্থ্যমন্ত্রক সম্পূর্ণ বিষয়টি পর্যালোচনা করে জানায়, এই মুচলেকা নীতিটি সমস্ত রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে আবার নতুন করে খতিয়ে দেখা উচিত। এর পর থেকেই অভিন্ন মুচলেকা নীতিটি কী ভাবে কার্যকর করা যায়, সেই বিষয়ে ক্রমাগত বৈঠকের আয়োজন করা হয়। একইসঙ্গে মুচলেকায় উল্লিখিত জরিমানার অর্থের পরিমাণ কী হবে, এই নীতি কী ভাবে প্রয়োগ করা হবে, ইন্টার্নশিপের পর কী ভাবে রাজ্যের সমস্ত আসন সঠিক সময়ে খালি করা যাবে, সে সংক্রান্ত আলোচনাও হয় এই বৈঠকগুলিতে।
রাজ্যের মুচলেকার শর্তগুলি আরোপের পিছনে মূল কারণ হল গ্রামাঞ্চলে সমাজকল্যাণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শূন্যপদগুলি পূরণ করে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগসুবিধা আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই মুচলেকার পরিমাণটি রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষায় ভর্তুকির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্থির করা হয়।
তবে গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধিই মূল লক্ষ্য হলে মুচলেকায় বরাদ্দ অর্থের বদলে নানা প্রশাসনিক পদ্ধতিও প্রণয়ন করা যেতে পারে বলে মনে করে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এই জন্যই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এনএমসি-র সুপারিশের ভিত্তিতে তৈরি পুরনো মুচলেকা নীতিটি বাতিলের জন্য একটি নির্দেশিকা প্রস্তুত করছে।