কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত।
ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট এবং কোডিং নিয়ে আগ্রহী পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করেছিল ন্যাশনাল স্টেম চ্যালেঞ্জ ২০২৪ প্রতিযোগিতায়। স্কুল, জেলা এবং রাজ্য স্তরে সেরা স্কুল হিসাবে জয়লাভের পর ২৭ অগস্টের চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতাতেও সেরার সেরা শিরোপা পেল যাদবপুর বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেণির ধ্রুবজ্যোতি পাইক এবং আদিত্য মণ্ডল।
এ দিনের অনুষ্ঠানে কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী দোদ্দলাহল্লি কেম্পেগৌড়া শিবকুমার এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী মধু বঙ্গারপ্পা বিজয়ীদের হাতে সোনার মেডেল এবং আর্থিক পুরস্কার তুলে দিয়েছেন।
ধ্রুবজ্যোতি এবং আদিত্য— দু'জনেই কোডিংয়ের সাহায্যে বিশেষ ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট তৈরি করে প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে। এ ছাড়া ‘মাস্টার মেকার’ হিসাবেও পুরস্কৃত হয়েছে ধ্রুবজ্যোতি। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে তারা ভাগ করে নিয়েছে নিজেদের অভিজ্ঞতা।
কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ২০২৪-র ‘মাস্টার মেকার’-কে মেডেল পরিয়ে দিচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত।
ধ্রুবজ্যোতি বলে, বেঙ্গালুরুর মতো শহরে আসাটাই একটা প্রাপ্তি। এ ছাড়াও স্কুল স্তর থেকে জেতার পর জাতীয় স্তরে নিজের স্কুলের প্রতিনিধি হিসাবে প্রতিযোগিতায় সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য ছিল। তাই জিততে পেরে খুব ভাল লাগছে। তবে আরও এগিয়ে যেতে হবে, থেমে থাকলে চলবে না। আদিত্য জানিয়েছে, এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে সে খুবই আনন্দিত। বিভিন্ন বিষয় শেখার সুযোগ হয়েছে এই প্রতিযোগিতায়। তাই আবারও এই প্রতিযোগিতায় সে অংশগ্রহণ করতে চাইবে।
ভবিষ্যতে কী হতে চায় কৃতি পড়ুয়ারা? ধ্রুবজ্যোতি সফট্অয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। আদিত্য কোডিং নিয়ে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী।
পড়ুয়াদের এই সাফল্যে গর্বিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানিয়েছেন, এই সাফল্যের নেপথ্যে ছাত্রদের অদম্য প্রতিভা ও পরিশ্রম। এই পুরস্কার শুধুমাত্র তাদের নিজেদের নয়, সমগ্র বিদ্যালয়ের জন্য গর্বের কারণ।
প্রধানশিক্ষক আরও বলেন, “এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য পড়ুয়াদের শুরু থেকেই উৎসাহ দেওয়া হয়। তাই এই কৃতিত্ব স্কুলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং আরও পড়ুয়া ভবিষ্যতে আগ্রহ প্রকাশ করবে বলে আশা রাখি।”
আয়োজক সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে প্রতিযোগীরা। ছবি: সংগৃহীত।
সংশ্লিষ্ট প্রতিযোগিতাটির জন্য স্কুলের ইলেক্ট্রনিক্সের শিক্ষক প্রসূনকলি ভৌমিক মেন্টর হিসাবে ধ্রুবজ্যোতি, আদিত্যদের যথাযথ পরামর্শ দিয়েছেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে তিনিই স্কুলের প্রতিনিধি হয়ে বেঙ্গালুরুতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “প্রায় এক মাসের জন্য ছেলেদের ইলেক্ট্রনিক সার্কিট, কোডিং সংক্রান্ত বিষয়গুলি শিখিয়েছি। এ ছাড়া, তারা নিজেরাও খুব উৎসাহের সঙ্গে প্রতিটি স্তরের টাস্ক সম্পূর্ণ করে প্রতিযোগিতায় জয় লাভ করেছে। তাই ভবিষ্যতে অন্যান্য পড়ুয়াদেরও এই বিষয়গুলিতে আরও কিছু শেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে।”
আন্তর্জাতিক সংস্থা 'ব্রিলিয়ো অ্যান্ড স্টেম লার্নিং'-এর সঙ্গে দ্য ন্যাশনাল এডুকেশন ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে দেশের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের পড়ুয়াদের সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাথমেটিক্স (স্টেম) নিয়ে পড়াশোনা এবং উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করা হয়ে থাকে। ২৭ অগস্ট প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বটি বেঙ্গালুরুর বনাশঙ্কারির ন্যাশনাল হিল ভিউ পাবলিক স্কুলে অনুষ্ঠিত হয়।
ন্যাশনাল স্টেম চ্যালেঞ্জ ২০২৪-এর চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থানে হায়দরাবাদের জেপিএইচএস হাইস্কুল নাগোল এবং মহারাষ্ট্রের শেশাবাঈ জ্ঞানেজ প্রশলা স্কুল তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। এই প্রতিযোগিতায় দেশের ২০০টিরও বেশি স্কুলের ২,০০০-এরও বেশি পড়ুয়া এবং ৪০০-র বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকারা অংশগ্রহণ করেছিল।