প্রতীকী ছবি।
প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা, ডবলু বি প্রাইমারি টেট পরীক্ষা প্রায় দোরগোড়ায়। আর মাত্র দিন দশেকের অপেক্ষা এবং তারপরই আমাদের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। তোমাদের প্রস্তুতিও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। প্রতিটি বিষয় নিয়ে তোমরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নিজেদের প্রস্তুতিকে ক্ষুরধার করছো আশা করা যায়। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসাবে বিষয়গুলোকে আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। টেট পরীক্ষায় শিশু মনস্তত্ব যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা তোমরা সকলেই অবগত। আগের প্রতিবেদনটিতে বিষয়টির সম্পূর্ণ সিলেবাস এবং প্রথম পর্যায়ের কিছু অধ্যায় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছিলাম। আজ যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে কিছু অধ্যায় নিয়ে আলোচনা করা যাক।
দ্বিতীয় ভাগে, ইনক্লুসিভ এডুকেশন বা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থায় মূলত প্রতিবন্ধকতা (শারীরিক ও মানসিক) সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। যেমন, সেরিব্রাল পালসি, ইন্টেলেকচুয়াল ডেফিসিট, অটিজম, এডিএইচই বা লার্নিং ডিসঅর্ডার। এই প্রতিবন্ধকতা ক্লাসরুমে কী ভাবে চেনা যেতে পারে, শিখনের অঙ্গ হিসেবে রাখা যেতে পারে, এই নিয়ে জানতে হবে। এছাড়াও, যে শিশুরা গিফটেড, তাদের শিখন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। ইন্টার্যাকশন, ইন্টিগ্রেশন এবং ইনক্লুশন আলাদাভাবে বুঝতে হবে। সঙ্গে, বাচ্চার ভৌগোলিক অবস্থান, ভাষা, লিঙ্গ, ধর্ম, বাড়ির অবস্থা, রোজগার এ গুলোর জন্য যা যা সমস্যা বা সুবিধা হতে পারে, তার সম্পর্কে জানা দরকার। এই সমস্ত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে অন্তর্ভুক্তি সঠিক অর্থে সম্ভব, সেই বিষয়ে থাকা নীতি, যেমন সর্বশিক্ষা অভিযান, মিড-ডে মিল বা রাইট টু এডুকেশন (আরটিই) অ্যাক্ট সম্বন্ধে ধারণা রাখতে হবে।
এই অংশের জন্য বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর অভ্যাস করা প্রয়োজন, কারণ কী ভাবে শিক্ষক এই বাচ্চাদের চাহিদা অর্থাৎ স্পেশাল নিড-কে পরিপূরণ করার চেষ্টা করবেন, সেইরকম প্রশ্ন আসে পরীক্ষায় বেশ কিছু। সঙ্গে আইডেন্টিফিকেশন সংক্রান্ত প্রশ্ন আসতে পারে। তাই, ছবির মতো করে প্রত্যেকটি বাচ্চাকে চেনা এবং তাদের শেখানোর উপায় জেনে রাখতে হবে।
তৃতীয় ভাগে, আমাদের শিখনের নীতি-কৌশল, শিখনের জন্য প্রয়োজনীয় গুণ, শিক্ষার ধরন এবং তাদের প্রবর্তক, কোন কোন বিষয়ের উপর শিখন নির্ভরশীল ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা ও প্রণালী কী ভাবে পরিবর্তিত হয়ে এখন শিশুকেন্দ্রিক (চাইল্ড-সেন্ট্রিক) শিক্ষাব্যবস্থায় এসেছে, সেই সম্পর্কে জানতে হবে। প্রেরণা (মোটিভেশন) এবং আবেগ (ইমোশন) সংক্রান্ত থিয়োরি জেনে রাখা দরকার, সঙ্গে স্মৃতি (মেমোরি) ও শিখন পদ্ধতি (লার্নিং)। রুশো, ডিউই, ফ্রয়েবল, মন্তেস্বরি ইত্যাদি নাম এবং এনাদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এবং কিছুটা বিভ্রান্তিকর, কারণ এনাদের কাজ একে অপরের কাজের সঙ্গে ভীষণভাবে যুক্ত। তাই ধারণা পরিষ্কার রাখতে হবে।
সুতরাং সমগ্র আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে প্রতিটি অধ্যায়কে খুঁটিয়ে পড়ে এবং প্রশ্নোত্তর অভ্যাস করে পরীক্ষার হলে যাওয়া বাঞ্ছনীয়। সকলের জন্য শুভকামনা রইল।
এই প্রতিবেদনটি ‘রাইস এডুকেশন’-এর পক্ষ থেকে টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে সংকলিত।