Independence Day 2024 Celebration

স্কুলগুলিতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন নিয়ে কিছু কথা, লিখছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ

জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান, দেশের প্রতি ভালবাসা- সব কিছু মিলিয়ে এই দিনের অনুভূতি এক অন্য আবেগের জন্ম দেয়।

Advertisement

পার্থ কর্মকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৪২
Share:

প্রতীকী চিত্র।

স্বাধীনতা-হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে,

Advertisement

কে বাঁচিতে চায়?

দাসত্ব-শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে,

Advertisement

কে পরিবে পায় |

—রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়

আজও এই কবিতা মনে এক গভীর অনুভূতির সৃষ্টি করে। ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে তাই কিছু কথা লিখতে বসলাম। দীর্ঘ কর্মজীবনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং দিনটির তাৎপর্য পড়ুয়াদের কাছে তুলে ধরার কিছু অভিজ্ঞতা কথা মনে পড়ে যায়।

শুরুতেই বলে রাখা ভাল, এখনও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যখন দেশের স্বার্থে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগের কাহিনি বর্ণনা করেন, কিছু সময়ের জন্য হলেও জাতীয়তাবোধের অনুভূতি, জাতীয় ঐক্য এবং সম্প্রীতির অনুরণন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেও দেখা যায়।

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ অগস্ট ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে এই দেশ নাগরিক স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। তাই প্রতি বছর এই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসাবে যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে পালন করা হয়ে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দিনটি উদযাপনের পদ্ধতি কম বেশি বদলেছে। এক সময়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারাই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতেন। বর্তমানে পরিচালন সমিতির সভাপতি জাতীয় পতাকা এবং প্রধান শিক্ষক পতাকা উত্তোলন করে থাকেন। এর পর জাতীয় পতাকাকে অভিবাদন জানিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মূর্তি, প্রতিকৃতি ও আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করে থাকেন।

এই বিশেষ দিনটি কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন স্কুলের পড়ুয়াদের সমান ভাবে এই দিনটি উদযাপন করা প্রয়োজন, তা বোঝাতে বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়েও পড়ুয়াদের সচেতন করতে চান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাই এই বিশেষ দিনে তাঁরা দেশের ‘সার্বভৌম-সমাজতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক-প্রজাতন্ত্র’— এই দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শেখানোর জন্য এই উদ্যোগ যথেষ্ট প্রভাব ফেলে, এমনটাই আমার বিশ্বাস।

তবে শুধু শিক্ষক-শিক্ষিকারাই বলবেন, আর পড়ুয়ারা বসে শুনবে, এমনটা হলে দিনটি উদযাপনের ক্ষেত্রে কিছুটা ফাঁকি থেকে যায়। তাই পড়ুয়ারাও যাতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের লেখা দেশাত্মবোধক গানে গলা মেলানো কিংবা নাচ করা, ইতিহাস-নির্ভর নাটকে অভিনয়, আবৃত্তি পাঠের মতো কাজে অংশগ্রহণ করে, সেই বিষয়টিতেও বিশেষ নজর থাকা প্রয়োজন। তাই বেশ কিছু স্কুলের তরফে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস এবং সংগ্রামীদের জীবন কাহিনি নিয়ে তাৎক্ষণিক বক্তৃতারও আয়োজন করা হয়ে থাকে।

কিছু কিছু স্কুলে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা কিংবা চিত্র প্রদর্শনীও হয়। এই ধরনের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের নিরিখেই হোক, কিংবা জ্ঞান অর্জনের কারণেই হোক, এই ধরনের অভ্যাস দিনটির মাহাত্ম্যকে আরও বেশি বৃদ্ধি করে তোলে। সমস্ত স্কুলগুলিতে এই অভ্যাস বজায় থাকা প্রয়োজন, যাতে পড়ুয়ারা দিনটিকে নিছক ছুটির দিন হিসাবে পালন না করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement