একটি সমীক্ষা জানাইল, ২০৫০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডে মোট জনসংখ্যার ৪০%-ই হইবেন নাস্তিক, ইউরোপের ২৩%-এর কোনও রূপ ধর্ম লইয়া মাথাব্যথা থাকিবে না। সমগ্র পৃথিবীতেই নাকি নাস্তিক্য বাড়িয়া গিয়াছে ৩%, ধার্মিকতা কমিয়াছে ৯%। ২০১০-এ, বিশ্বে ছিলেন ১.১ বিলিয়ন নাস্তিক, ২০৫০ সালে এই সংখ্যা ১.২ বিলিয়ন ছাড়াইয়া যাইবে। ইংল্যান্ডের প্রবল প্রভাবশালী খ্রিস্টান ধর্মনেতা, ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলিয়াছিলেন, ঈশ্বরের অস্তিত্ব লইয়া তাঁহার প্রায়ই সংশয় উপস্থিত হয়। ইহার পর জোর বিতর্কও হইয়াছিল। কেহ বলিয়াছিলেন, এত বড় ধর্মচর্চাকারীরই যদি সন্দেহ ঘটে, সাধারণ মানুষ বিশ্বাস ধরিয়া রাখিবে কী করিয়া। কেহ বলিয়াছিল, সন্দেহরহিত বিশ্বাস আসলে একটি প্রশ্নহীন আনুগত্য, যাহা চূড়ান্ত রক্ষণশীলতারই সমার্থক। ফলে, এই স্বীকারোক্তি বরং প্রগতিশীলতার, অনবরত আত্মসমীক্ষারই লক্ষণ। অজ্ঞেয়বাদিতা, নাস্তিক্য, এইগুলি লইয়া আলোচনা ধর্মীয় নেতাগণ সাধারণত করেন না, তাঁহারা একটি বিশ্বাসের বর্মের অভ্যন্তরে সুরক্ষিত ও নিরাপদ অবস্থান উপভোগ করেন, তাঁহাদের বক্তব্যেও অন্যপক্ষীয়দের প্রতি প্রশ্রয় খুবই বিরল। কিন্তু অন্য প্রকারের মন্তব্যে নাড়াচাড়া পড়িলে বুঝা যায়, মানুষের ভক্তিপৃথিবীর বাহিরে এক বিশাল পৃথিবী গজগজ করিতেছে, এবং তাহার প্রভাব ক্রমে বৃদ্ধি পাইতেছে।
সত্য বলিতে কী, যে মানুষটির সংসার রহিয়াছে, অফিসেও যাইতে হয়, তাহার ভগবান লইয়া মাথা ঘামাইবার সময় নাই। সর্ব ক্ষণ অসংখ্য বিরক্তি ও বিপদের দ্বারা আবৃত থাকিয়া, নিগূঢ় ও নির্বস্তুক একটি প্রশ্ন লইয়া ভাবিবার মানসিকতাও তাহার অবশিষ্ট নাই। প্রথা তাহাকে বলিয়াছে, কিছু ধর্মীয় অনুষ্ঠান করিতে হয়, সে তাহা মানিয়া সেইগুলি পালন করে, আবার ফাঁকে ফাঁকে মোবাইল ফোনে সহকর্মীর সহিত জরুরি কথা বলিয়া লইতেও ছাড়ে না। ঈশ্বর থাকিলে আছেন, না থাকিলে নাই, আমাকে আমার কাজটি করিয়া ফেলিতে হইবে সাড়ে ন’টার পূর্বেই, তাই পথ ছাড়ো ভাই— ইহাই মানুষের মূল প্রবণতা। ধর্মীয় মৌলবাদ যে প্রায়ই নির্বিচারে নিরীহ প্রাণ কাড়িয়া লইতেছে, উগ্রতম আস্ফালনে লোকের মুণ্ড কাটিয়া সেই দৃশ্য সোশাল নেটওয়ার্কে পোস্ট করিতেছে, তাহার একটি প্রধান কারণ: মৌলবাদীরা বুঝিয়াছে, ধর্ম লইয়া আধিক্য এখন মানুষের হৃদয়ের মূল সরণি হইতে খসিয়া পড়িয়াছে। তাই মৌলবাদীদের এমন অতিরিক্ত হিংস্র ব্যবহার, কোণঠাসা হইলে লোকে যেমনটি করিতে উদ্যত হয়।
ঈশ্বর আছেন কি না, সেই তর্কের মীমাংসা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু ঈশ্বর মঙ্গলময় কি না, তাহা লইয়া এই সময়ে বাস করিয়া আর কোনও সন্দেহ না থাকিবারই সম্ভাবনা। সংবাদপত্রটি মন দিয়া পাঠ করিলেই বুঝা যায়, আর যাহাই হউক, কোনও করুণাঘন অতিলৌকিক শক্তি এই গ্রহের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করিতেছেন না। সেই প্রসঙ্গে কেহ বলিতেই পারেন, ঈশ্বর স্রষ্টা, কিন্তু তাঁহার মূল্যবোধগুলি মনুষ্য-মূল্যবোধের সহিত সমঞ্জস হইতে হইবে, এই দায় তাঁহার স্কন্ধে অর্পিত হইল কী করিয়া। অন্যায় রোধ করিবার ও ন্যায় লালন করিবার দায়িত্ব তিনি লইবেন কেন, মানুষ নিজেদের মধ্যে লাঠালাঠি করিয়া মরুক না। উত্তরে পালটা কেহ বলিতেই পারেন, সৃষ্ট বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণ ভদ্রলোক মাত্রের কর্তব্য, পিতা যেমন সন্তানের মঙ্গলচিন্তা করেন। ইহাও বলিতে পারেন: যিনি আমার ভাল লইয়া চিন্তিত নহেন, আমি তাঁহাকে লইয়া চিন্তা করিতে যাইব কোন গরজে? ঈশ্বরের অস্তিত্ব লইয়া তর্ক প্রকৃত প্রস্তাবে তাই তাঁহার উদ্দেশ্য ও কর্মপ্রণালী লইয়া তর্ক। পৃথিবী েয প্রবল গতিতে নৈরাজ্য ও ক্রূরতার দিকে ধাবিত হইতেছে, সেই তর্কে নাস্তিকদের জয় লাভ করিবার সম্ভাবনা প্রবল।
য ৎ কি ঞ্চি ৎ
সমীক্ষায় জানা গেল, ইঁদুররাও গান গায়, ইঁদুরনিদের ইমপ্রেস করার জন্য। ইঁদুরনি চোখের আড়ালে থাকলে সে রীতিমত প্যাঁচালো গান বাঁধে, কাছে এলে শিল্প কিছুটা স্ট্রেটকাট হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক, তখন তো শারীরিক কসরতের জন্য মূল এনার্জি জমাতে হবে। তা হলে গান গাইবার ফিল্ডে পাখির দখলদারি খর্ব হল। কিন্তু কূট প্রশ্ন, ট্র্যাফিক সিগনাল গান গায় কেন? নিশ্চয় অন্য একটি ট্র্যাফিক সিগনালকে বিয়ে করার জন্য। উৎসবের রাজ্যে ওদের বিয়ে-উৎসব লাগিয়ে দিলে হয় না?