বিতর্কিত: ইডি-র হেফাজতে অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল গ্রেফতার হওয়ার পর দিল্লিতে কংগ্রেসের অনেক পুরনো নেতাই মনে মনে খুশি। বিশেষত যাঁরা এক সময় প্রয়াত শীলা দীক্ষিতের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কারণ, তাঁরা মনে করেন কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শীলা দীক্ষিতই দিল্লির ভোল পাল্টে দিয়েছিলেন। কেজরীওয়াল শুধু যে ভোটে শীলাকে হারিয়েছিলেন তা নয়, শীলা দীক্ষিতের সরকারের বিরুদ্ধে তিনি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। পুরনো কংগ্রেস নেতাদের দাবি, তার অনেকটাই অপপ্রচার। এই নিয়েই এক ঘরোয়া আড্ডায় সে দিন হাজির ছিলেন শীলার পুত্র সন্দীপ দীক্ষিত। পূর্ব দিল্লির প্রাক্তন সাংসদ। তিনি মানলেন, অপপ্রচার তাঁর বিরুদ্ধেও হয়েছিল। এক জন সন্দীপের সামনেই ফস করে বলে বসলেন, তখন বাসে চড়লে শোনা যেত দিল্লিতে যত বেসরকারি বাস চলে, তার মালিক সন্দীপ, মুখ্যমন্ত্রী-পুত্র। সন্দীপ অর্থবহ ভাবে হাসতে হাসতে বললেন, এমন কথা তো...
পরবর্তী নেতা?
দিল্লির রামলীলা ময়দানে গত রবিবারই ইন্ডিয়া জোটের বিরাট জনসভা হল। অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতারির প্রতিবাদ ছিল বিরোধীদের প্রধান বিষয়। বিরোধীদের মঞ্চে সে দিন হাজির কেজরীওয়ালের স্ত্রী সুনীতা কেজরীওয়াল। তাও একেবারে সনিয়া গান্ধীর পাশে। মঞ্চে না উঠলেও সে দিন কেজরীওয়াল পরিবারের আরও দুই তরুণ সদস্য রামলীলা ময়দানে হাজির ছিলেন। অরবিন্দ ও সুনীতার পুত্র-কন্যা পুলকিত ও হর্ষিতা। তাঁরা দু’জনেই বাবার মতো আইআইটি-র স্নাতক। নিজের পেশার পাশাপাশি আম আদমি পার্টির জন্যও কাজ করেন। অরবিন্দ ইডি-র হেফাজতে যাওয়ার পরে সুনীতা রাজনীতির আঙিনায় চলে এসেছেন। ভবিষ্যতে কি হর্ষিতা ও পুলকিতকেও রাজনীতিতে দেখা যাবে?
আতঙ্কের আবহ
ক’দিন আগেও দু’জনের মধ্যে ছিল সাপে-নেউলে সম্পর্ক। ভাইপো চিরাগ পাসোয়ান বিজেপি থেকে টিকিট পাওয়ায় সোজা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন কাকা পশুপতি পারস। ভাইপোর বিরুদ্ধে লড়ার হুমকি দিয়ে ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন তিনি। কিন্তু ক’দিন আগে হঠাৎ বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে দেখা করে ভাইপো চিরাগকেই সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন পারস। তাঁর এই ৩৬০ ডিগ্রি অবস্থান পরিবর্তনের কারণ ঠিক জানা না গেলেও, শোনা যাচ্ছে বিজেপির শীর্ষ স্তর থেকে ফোন যায় পারসের কাছে। চাঁছাছোলা ভাষায় তাঁকে ভোট ময়দান থেকে সরে যেতে বলা হয়। না হলে ফল ভোগার হুমকিও দেওয়া হয় পরোক্ষে। চারিদিকে যে ভাবে বিরোধীরা গ্রেফতার হচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীরাও ছাড় পাচ্ছেন না, তাতে আর ঝুঁকি নেওয়ার সাহস দেখাতে পারেননি পারস।
স্থানচ্যুত গান্ধীমূর্তি
রীতি অনুযায়ী, বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনের শুরুতে বক্তব্য পেশ করেন রাষ্ট্রপতি। নতুন সংসদে এ বারের অন্তর্বর্তী বাজেটেই প্রথম বার বক্তব্য পেশ করার কথা ছিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর। ভাষণের আগের সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির কনভয়ের মহড়ায় দেখা যায়, ভিআইপি প্রবেশপথের সামনে রাষ্ট্রপতির ঘোড়ার গাড়ি দাঁড় করানোর জন্য যথেষ্ট জায়গা মিলছে না। তখন রাতভর খোঁড়াখুঁড়ি করে কোনও ভাবে ঘোড়া দাঁড় করানোর জায়গা বার করা হয়। তবে, ওই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সংসদ চত্বরে নতুন ভিভিআইপি রোড বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার জন্য সরিয়ে ফেলা হচ্ছে সংসদ চত্বরের গান্ধী মূর্তি-সহ চোদ্দোটি মূর্তিকে। এত দিন বিরোধী ও শাসক— উভয়েই গান্ধীমূর্তিটিকেই ধর্নাস্থল হিসাবে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু সেই গান্ধীকেও এ বার সরতে হচ্ছে। নতুন সরকারের নতুন অধিবেশনে সম্ভবত নতুন স্থানে দেখা যাবে গান্ধীমূর্তিকে।
রংবাহারি চুল
হোলির ছুটির পরে সুপ্রিম কোর্ট খুলেছে। শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত অ্যালকোহলের বিষয়ে মামলার শুনানি চলছে। সওয়াল করতে উঠলেন প্রবীণ আইনজীবী দীনেশ দ্বিবেদী। মাথায় ধপধপে সাদা চুল। কিন্তু কোথাও লাল, কোথাও সবুজ, হলুদ রঙের ছোঁয়া। দুঃখ প্রকাশ করলেন রংবাহারি চুলের জন্য। বললেন, হোলির পার্টির প্রভাব। ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিরা থাকলে রং খেলা এড়ানো যায় না। মুচকি হেসে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বললেন, “এর সঙ্গে অ্যালকোহলের সম্পর্ক নেই বলছেন!” সবাই হো হো করে হাসছিলেন। দ্বিবেদীও লাজুক হেসে বললেন, “হোলির পার্টি মানেই অ্যালকোহল। অস্বীকার করতে পারি না যে, আমি হুইস্কি-ভক্ত!” এর পরে আলোচনা আবার শিল্পে ব্যবহৃত অ্যালকোহলের দিকে ফিরল।