Sakshi Maharaj

হাত সেঁকার আগুন খোঁজা হচ্ছে, হাতটা কিন্তু পুড়তেও পারে

আবার এক ভয়ঙ্কর মেরুকরণের চেষ্টা। রাম জন্মভূমির রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে শুধু রাম মন্দিরে আর ভরসা রাখতে পারছে না গেরুয়া শিবির। তাই এ বার সমাধি মন্দির নিয়েও টানাটানি শুরু।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

আবার এক ভয়ঙ্কর মেরুকরণের চেষ্টা। রাম জন্মভূমির রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে শুধু রাম মন্দিরে আর ভরসা রাখতে পারছে না গেরুয়া শিবির। তাই এ বার সমাধি মন্দির নিয়েও টানাটানি শুরু।

Advertisement

কবর দেওয়া আর চলবে না। কবরে জমি নষ্ট হয়। তাই আইন করে কবর দেওয়া বন্ধ করতে হবে। প্রকাশ্য জনসভার মঞ্চ থেকে এমনই দাবি তুললেন সাক্ষী মহারাজ। সাক্ষী রইল উন্নাও, সাক্ষী রইল উত্তরপ্রদেশ।

সাক্ষী মহারাজ সাংসদ। যে সে দলের নন, দেশের প্রধান শাসক দলের। তিনি যখন আইন করে কবর নিষিদ্ধকরণের জিগির তোলেন, তখন সে কথার প্রভাব পড়ে বই কি! কোনও মনে আতঙ্ক জাগে, আর কোথাও জাগে সাম্প্রদায়িক উল্লাস। এই বিশেষ উল্লাসটাই দরকার এখন গৈরিক ঝড় তুলতে।

Advertisement

সাক্ষী মহারাজের মন্তব্য নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধী শিবির থেকে নিন্দার ঢেউ আসছে। সাক্ষীর দল নিশ্চুপ। যেন সাতেও নেই, পাঁচেও নেই। বাস্তবটা কিন্তু তেমন নয়। সাক্ষী মহারাজের মতো সাধু-সন্তরা এমন মন্তব্য করেই থাকেন, এ সব তাঁদের ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা, মন্ত্রিসভা বা সরকার বা শাসক দলের সঙ্গে এ সবের কোনও সম্পর্ক নেই— এমনটা ভাবার কোনও কারণ কিন্তু নেই। বাস্তবের আয়না বলে, গোটাটাই সুপরিকল্পিত, গোটাটাই ছকে বাঁধা, গোটাটাই প্রচার কৌশলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সাক্ষী মহারাজদের মতো কট্টরবাদী মুখগুলোকে দলে লালন করা হয়, তাঁদের দিয়ে মাঝে-মধ্যে মুখ খোলানো হয়, মেরুকরণের আগুন উস্কে দেওয়া হয়, কখনও-সখনও এর পর একটা রাশ টানার ভঙ্গিও করা হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই, আর কোনও কঠোর পদক্ষেপ এঁদের বিরুদ্ধে হয় না। বরং প্রয়োজন মতো আবার ব্যবহারের জন্য অস্ত্রটাকে কিছু দিন সযত্নে সরিয়ে রাখা হয়।

এ বারও কৌশলটা সে রকমই। মেরুকরণের আগুনে হাত সেঁকে নেওয়ার চেষ্টা চলছে উত্তরপ্রদেশে আজ। রাম জন্মভূমি, বাবরি মসজিদ, দাদরি কাণ্ড এবং আরও অনেক কাণ্ড নিয়ে বারুদের স্তূপ আগে থেকেই তৈরি। এ বার তাতে স্ফূলিঙ্গপাতের চেষ্টা হচ্ছে।

আগুনটা যদি সত্যিই জ্বলে ওঠে, নিয়ন্ত্রণে কিন্তু থাকবে না। হাত সেঁকার ইচ্ছা রয়েছে যাঁদের, হাতটা যে তাঁদের পুড়বে না, এ ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত তো?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement