London Diary

লন্ডন ডায়েরি: ডেভনে পালিত ভগিনী নিবেদিতার জন্মদিন

১৯১১-য় দার্জিলিঙে নিবেদিতার জীবনাবসান হয়। ১৯১২-য় তাঁর চিতাভস্ম ইংল্যান্ডে ফেরে, এবং পারিবারিক সমাধিস্থলে প্রোথিত হয়।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২ ০৬:১৯
Share:

লন্ডন ডায়েরি। ফাইল চিত্র।

ইংল্যান্ডের ডেভনের গ্রেট টরিংটন গ্রামে ভগিনী নিবেদিতার পারিবারিক সমাধিস্থলে তাঁর ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপিত হল। স্থানীয় মেয়র সিস্টারের মূর্তিতে মালা দিলেন। রামকৃষ্ণ মিশন এবং ইংল্যান্ডের সিস্টার নিবেদিতা সেলিব্রেশনস সংস্থার সহায়তায় ২০১৯-এ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপহার দেওয়া ব্রোঞ্জ মূর্তিটি উন্মোচিত হয়। স্থানীয় কাউন্সিলে সিস্টারের জন্মদিন পালন এই প্রথম। কাউন্সিলরের স্বীকারোক্তি, মূর্তি স্থাপনের আগে এলাকার সঙ্গে সিস্টারের পরিবারের যোগসূত্র বা ভারতে তাঁর আত্মত্যাগী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাঁরা বিশেষ কিছু জানতেন না।

Advertisement

নিবেদিতার জন্ম ১৮৬৭-তে। তখন নাম ছিল মার্গারেট এলিজ়াবেথ নোবল। গ্রেট টরিংটন এলাকায় বড় হয়েছিলেন। লন্ডনে ১৮৯৫ সালে স্বামীজির সঙ্গে সাক্ষাতের পর কলকাতায় আসেন, নাম হয় ‘নিবেদিতা’। জীবনের অনেকখানিই কাটান ভারতে, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্ত্রীশিক্ষার বিস্তারে যুক্ত ছিলেন। ১৯১১-য় দার্জিলিঙে তাঁর জীবনাবসান হয়। ১৯১২-য় তাঁর চিতাভস্ম ইংল্যান্ডে ফেরে, এবং পারিবারিক সমাধিস্থলে প্রোথিত হয়। আশা করা হচ্ছে, ২০২৩-এর মার্চের মধ্যে লন্ডনের উইম্বলডনে সিস্টারের একটি মূর্তি বসবে। রামকৃষ্ণ মিশনের তুষার মহারাজ মূর্তিটি তৈরি করছেন।

মহীয়সী: ডেভনের গ্রেট টরিংটনে ভগিনী নিবেদিতার ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন।

প্রয়াত ভারতবন্ধু

Advertisement

৭৭ বছর বয়সে স্কটল্যান্ডে প্রয়াত হলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক এবং ভারতবন্ধু ইয়ান জ্যাক। গ্রান্টা পত্রিকা ও দি ইনডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার রবিবারের সংস্করণের এই প্রাক্তন সম্পাদক বহু বছর দ্য গার্ডিয়ান-এ কলাম লিখছিলেন, শেষ লিখেছেন প্রয়াণের আগের সপ্তাহেই। কলকাতা তাঁর হৃদয়ে বিশেষ জায়গায় ছিল, বার বার ফিরতেন এখানে। শ্রীরামপুরের চটকল, স্কটল্যান্ডযোগ, বিহারের ম্যাকলাস্কিগঞ্জের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় নিয়ে লিখেছেন। বলতেন— কলকাতা, বাংলা, বিহার, বাংলাদেশ ব্রিটেনের শিল্প সভ্যতার পরশ ধরে রেখেছে। তাঁর বইতে কলকাতায় কাটানো দিনগুলি নিয়ে অধ্যায় আছে। প্রবন্ধ সঙ্কলনে ১৯৮৯-এ গঙ্গাপারের শ্রীরামপুর কলেজে বসবাস প্রসঙ্গে লিখেছেন, “শ্রীরামপুরে সন্ধে নামলে মনে হয় আসলে বাড়িতেই ফিরেছি, যেন এই সময়, এই দেশ আমার স্কটিশ বাবা-মা, দাদু-দিদার বড় আপন, মোড় ঘুরলেই বুঝি তাঁদের দেখা পাব, পরনে ধুতি আর শাড়ি!...” তাঁর দয়ালু স্বভাব, উষ্ণ ব্যক্তিত্ব, সুললিত গদ্যের অভাব অনুভূত হবে।

এভারেস্ট যাত্রার ১০০

ব্রিটিশ অভিযাত্রী দলের অংশ হিসাবে প্রথম বার এভারেস্ট আরোহণের চেষ্টা করেন জর্জ ম্যালোরি। সাম্রাজ্যবাদের গৌরব রক্ষায় সবার আগে এভারেস্টে উঠতে চেয়েছিল ব্রিটিশরা। তবে, ১৯২২-এর সেই প্রথম অভিযান ব্যর্থ হয়। ১৯২৪-এ ম্যালোরি আর অ্যান্ড্রু আরভাইন আবার এভারেস্টে যান। ফের ব্যর্থতা। দু’জনেই বরফরাজ্যে প্রাণ হারান, দেহ মেলেনি। অভিযানে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন চিত্রগ্রাহক এবং চিত্রকার ক্যাপ্টেন জন নোয়েল। তিনি দার্জিলিঙে ফিরে বহু সম্পাদনার পর ফিল্মটিকে বিজয়গাথার পরিবর্তে অভিযানের আখ্যানে বদলে দেন। ১৯২৪-এ মুক্তি পায় তাঁর ছবি দি এপিক অব এভারেস্ট। প্রথম দেখানো হয়েছিল কলকাতার এলফিনস্টোন পিকচার হাউসে। ১৯২২-এর অভিযানটির শতবর্ষে লন্ডনের রয়্যাল জিয়োগ্রাফিক সোসাইটিতে নোয়েলের তোলা ছবির প্রদর্শনী চলছে। প্রদর্শনী অভিযানকে সাম্রাজ্যবাদের জয় এবং ম্যালোরি ও আরভাইনকে বীর রূপে দেখিয়েছে। তাঁর ক্যামেরায় অভিযানসঙ্গী স্থানীয় শেরপা, রাঁধুনি, কুলি, মুচিদের অজানা কাহিনিও উঠে এসেছে। সেখানেও জাতি, শ্রেণি সম্পর্কে আত্মম্ভরিতার বোঝাটি নিয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশরা। উচ্চপদস্থ মানুষ ছাড়া কারও সঙ্গে মিশত না। তিব্বতি অনুবাদক, মুচি, মেয়ে কুলির ছবি আছে প্রদর্শনীতে। অভিযানে আট জন কুলিও প্রাণ হারান। তালিকায় প্রথম তাঁদের নাম দেখা গেল।

উপেক্ষিত: অভিযানে মহিলা কুলি।

বিষয়ী বরিস

আর্থিক কারণেই নাকি নেতা পদের জন্য ঋষি সুনকের বিরুদ্ধে লড়েননি বরিস জনসন। জুলাইয়ে পদত্যাগের পর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন এন্টারটেনমেন্ট ও ট্যালেন্ট এজেন্সির সঙ্গে কথা বলছেন। তারা নাকি জনসনকে বলেছে, বক্তৃতা দিয়ে ও স্মৃতিকথা লিখে বছরে ২০ মিলিয়ন পাউন্ড রোজগারের সম্ভাবনা আছে তাঁর। কিন্তু নেতৃত্বের ভোটে হারলে তাঁর বাজারদর কমে অর্ধেক হয়ে যেতে পারে। শোনামাত্র জনসন পিছিয়ে এসেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement